WFTW Body: 

অনন্ত জীবন হলো ঈশ্বরকে আমাদের পিতা হিসাবে এবং যীশু খ্রীষ্টকে আমাদের প্রভু, ত্রাণকর্তা এবং অগ্রদূত হিসাবে জানা (যোহন ১৭:৩)। আপনাকে অবশ্যই আপনার স্বর্গীয় পিতা এবং প্রভু যীশুর সাথে ঘনিষ্ঠতা গড়ে তুলতে হবে, যদি আপনি একটি সুস্থির খ্রীষ্টীয় জীবনযাপন করতে চান। এটি খ্রীষ্টীয় জীবনে পিছিয়ে পরার বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় সুরক্ষা।

কেবল উত্তেজক সুসমাচার শোনা যথেষ্ট নয়, এমনকি যদিও সেগুলি ঈশ্বরের কাছ থেকে অভিষিক্ত বাক্য হতে পারে। এমনকি স্বর্গ থেকে পড়া মান্নায় ২৪ ঘন্টার মধ্যে কীট জন্মাতে এবং দুর্গন্ধ হতে শুরু করেছিল (যাত্রাপুস্তক ১৬:২০)। অনুরূপভাবে আপনার খ্রীষ্টীয় জীবনের সতেজতা হারানো এবং ২৪ ঘন্টার মধ্যে বাসি হয়ে যাওয়া সহজ!! কিন্তু যখন একই মান্না নিয়ম সিন্দুকের ভিতরে (আবাস তাম্বুর সবচেয়ে পবিত্র স্থানে) ঈশ্বরের উপস্থিতিতে রাখা হয়েছিল এবং সেটি নিয়ে ইস্রায়েলীয়েরা ৪০ বছর মরুভূমিতে ঘুরে বেড়িয়েছিল, এমনকি তারপর শত শত বছর কনান দেশে বসতি কালেও এটিতে (মান্নাতে) কীট জন্মায়নি বা দুর্গন্ধ হয়নি (যাত্রাপুস্তক ১৬:৩৩; ইব্রীয় ৯:৪)। আমাদের জীবনে সবকিছুকে সতেজ রাখার জন্য এটিই হল ঈশ্বরের উপস্থিতির শক্তি। তাই আপনি অন্যদের কাছ থেকে প্রভুর সম্বন্ধে যা কিছু শুনছেন (মিটিংয়ে এবং রেকর্ডিং টেপে) তা অবশ্যই প্রভুর সামনে নিয়ে যেতে হবে এবং প্রভুর কাছ থেকে সরাসরি তাঁর বাক্যের মাধ্যমে আপনি যে প্রকাশ পান তা প্রত্যক্ষ জ্ঞানে রূপান্তরিত করতে হবে।

মথি ১১:২৭-২৯ পদে যীশু আমাদের বলেন যে আমরা পিতাকে জানতে পারি না যতক্ষণ না প্রভু যীশু আমাদের কাছে পিতাকে প্রকাশ করেন। সেই প্রকাশ পাওয়ার জন্য, তিনি আমাদেরকে তাঁর কাছে আসতে এবং তাঁর যোঁয়ালি (ক্রুশ) আমাদের উপর তুলে নিতে এবং তাঁর কাছ থেকে মৃদুতা এবং নম্রতা শেখার জন্য আমন্ত্রণ জানান (ওই তিনটি পদ একসাথে পড়ুন)। কেবল এই দুটি বিষয়ই প্রভু যীশু আমাদেরকে তাঁর কাছ থেকে শিখতে বলেছেন৷ তাই বিশেষ করে এই ক্ষেত্রে প্রভু যীশুর মহিমা দেখতে আপনাকে অবশ্যই বাক্যটি দেখতে হবে।

(১) মৃদুতা। প্রথমত, প্রভু যীশুর মৃদুতা দেখা যায় যে তিনি সর্বদা ফরীশীদের বিরুদ্ধে পাপী লোকদের পক্ষ নিয়েছিলেন। ব্যভিচারে ধরা পড়া মহিলার ক্ষেত্রে আমরা এটি দেখতে পাই (যোহন ৮:১-১২)। আর সেই পাপী মহিলার ক্ষেত্রেও যে সেই শিমোন ফরীশীর বাড়িতে তাঁর (প্রভু যীশুর) পায়ে তেল অভিষেক করেছিল (লুক ৭:৩৬-৫০)৷ যতক্ষণ পর্যন্ত শিমোন সেই পাপী মহিলার প্রতি সমালোচনামূলক মনোভাব না রাখেন, প্রভু যীশু ততক্ষণ কিছুই বলেননি। কিন্তু যে মুহুর্তে প্রভু যীশু দেখলেন যে শিমোন সেই মহিলাকে তুচ্ছ করছেন, তিনি তাকে ভর্ৎসনা করলেন তার মৃদুতা ও ঈশ্বরের প্রতি ভালবাসার অভাবের জন্য (লুক ৭:৪০-৪৭)। যারা অনুতপ্ত পাপীদের সমালোচনা করত তাদের প্রতি প্রভু যীশু খুবই কঠোর ছিলেন। তিনি সর্বদা বাইবেল-চাপড়ান ফরীশীদের বিরুদ্ধে এবং অনুতপ্ত পাপীদের পক্ষ নিয়েছেন। এটি জানা আমাদের জন্য একটি বড় সান্ত্বনা। এই মৃদুতা আমাদের অবশ্যই তাঁর কাছ থেকে শিখতে হবে।

প্রভু যীশুর মৃদুতার দ্বিতীয় দিকটি দেখা যায় যারা তাঁকে ক্ষতি করেছিল তাদের প্রতি তাঁর ক্ষমাশীল মনোভাবের মাধ্যমে। যখন লোকেরা তাঁকে ভূতেদের অধিপতি বলেছিল, তখন তিনি অবিলম্বে বলেছিলেন যে তাদের ক্ষমা করা হয়েছে (মথি ১২:২৪, ৩২)। যখন তারা তাঁর সাথে খারাপ ব্যবহার করত, তখন তিনি কখনও তাদের হুমকি দেননি। তিনি কেবল চুপ করে থেকেছেন (১ পিতর ২:২৩)। এটি যীশুর মৃদুতার দ্বিতীয় দিক যা আমাদের অবশ্যই শিখতে হবে। আমাদের অবশ্যই তিক্ততা, প্রতিশোধ, ক্ষোভ বা ক্ষমাহীন আত্মার সামান্যতম চিন্তাকেও ঝেড়ে ফেলতে হবে, যেমন আমরা অবিলম্বে আমাদের হাতে পড়ে যাওয়া একটি টিকটিকি বা আরশোলাকে ঝেড়ে ফেলি।

(২) নম্রতা। মথি লিখিত সুসমাচারের প্রথম ছয়টি পদ আমাদেরকে প্রভু যীশুর নম্রতা সম্পর্কে কিছু দেখায় যে তিনি কোন পরিবারের মাধ্যমে জন্মগ্রহণ করতে বেছে নিয়েছিলেন। যিহূদী বংশধারা সাধারণত মহিলাদের নাম উল্লেখ করে না। তবে এখানে চারজন নারীর কথা বলা হয়েছে- তামর, রাহব, রুথ এবং বৎশেবা। তামর তার শ্বশুর যিহূদার সাথে ব্যভিচার করে একটি সন্তানের জন্ম দিয়েছিল (আদিপুস্তক ৩৮)। রাহব যিরীহোর একজন সুপরিচিত বেশ্যা ছিল (যিহোশূয় ২ অধ্যায়)। রুথ ছিল একজন মোয়াবীয় - মোয়াব ব্যভিচারের মাধ্যমে জন্মগ্রহণ করেছিল - লোটের কন্যা তার পিতাকে তার সাথে ব্যভিচার করতে বাধ্য করেছিল (আদিপুস্তক ১৯)। আর বৎশেবা সেই স্ত্রী যে দাউদের সাথে ব্যভিচার করেছিল। কেন এই চার মহিলার নাম (যারা সকলেই যৌন পাপের সাথে কোনও না কোনওভাবে যুক্ত ছিল) নুতন নিয়মের প্রথম অনুচ্ছেদে উল্লেখ করা হয়েছে? এটি দেখানোর জন্য যে প্রভু যীশু পৃথিবীতে এসেছিলেন পাপীদের সনাক্ত করতে এবং তাদের রক্ষা করতে।

প্রভু যীশুর নম্রতা দেখা যায় নিম্নপদস্থ কাজ (একজন ছুতোর) যা তিনি পৃথিবীতে করেছিলেন এবং তাঁর পার্থিব জীবন-যাপনের সমস্ত সময়ে যে পরিচারকের-মনোভাব ছিল তার মাধ্যমে। পরিচারকের-মনোভাব হলো এমন একটি মনোভাব যা অবিরতভাবে সতর্ক থাকে, অন্যের প্রয়োজনের প্রতি লক্ষ্য রাখে এবং যা পর্যবেক্ষণের সাথে সাথে এই ধরনের চাহিদাগুলি পূরণ করতে দ্রুত এগিয়ে যায় (যেমন যীশু শিষ্যদের পা ধোয়ান)।

অ্যান্ড্রু মারের বই নম্রতাকে সংজ্ঞায়িত করেছে: "নিজেকে শূন্য করতে ইচ্ছুক হওয়া, যাতে ঈশ্বর সর্বেসর্বা হতে পারেন"। এটাই প্রভু যীশুকে আনন্দিত করে। এটাই আমাদেরকে তাঁর কাছ থেকে শিখতে হবে।

তাই প্রভু যীশুর যোঁয়ালি সর্বদা আপনার কাঁধে তুলে নিন এবং তাঁর কাছ থেকে মৃদুতা এবং নম্রতা শিখুন। এইভাবে তিনি আপনার কাছে পিতাকে আরও বেশি করে প্রকাশ করতে সক্ষম হবেন।