লিখেছেন :   জ্যাক পুনেন বিভাগগুলি :   মণ্ডলী শিষ্য
WFTW Body: 

মণ্ডলী হল খ্রীষ্টের দেহ, কেবল প্রতি সপ্তাহে একত্রিত হওয়া বিশ্বাসীদের একটি দল নয়। আমাদের অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে এটিই সেই দেহ যা আমরা তৈরি করছি, কেবল একটি “ধর্মীয় খ্রীষ্টান দল” নয়। যে কেউ একটি ধর্মীয় দল গঠন করতে পারে। তবে, খ্রীষ্টের দেহ গঠনের জন্য ঈশ্বরের অনুগ্রহ এবং অভিষেকের প্রয়োজন - এবং এর জন্য আমাদের নিজেদেরকে অস্বীকার করতে হবে, প্রতিদিন মৃত্যুবরণ করতে হবে এবং পবিত্র আত্মায় পূর্ণ হতে হবে।

পুরাতন নিয়মে ইস্রায়েলীয়রা একটি ধর্মসভা ছিল, একটি দেহ নয়। এমনকি আজও অনেক বড় গির্জাই ধর্মসভা, একটি দেহ নয়। কিছু ছোট, ঘর-ভিত্তিক গির্জা এর চেয়ে ভালো - তারা ক্লাব, কিন্তু একটি দেহ নয়। কিন্তু এখানে প্রভু যীশু তাঁর দেহ তৈরি করছেন।

খ্রীষ্টের দেহ প্রথম দেখা যায় একজন মানুষ যখন খাঁচায় (গবাদি পশুর খাবারের পাত্র) শুয়ে ছিল। সেই অপমানজনক জন্মের লজ্জাই ছিল সেই চিহ্ন যার দ্বারা রাখালরা খ্রীষ্টের দেহ শনাক্ত করেছিল (লূক ২:১২ দেখুন)। আবারও অপমানের সাথে খ্রীষ্টের দেহকে শেষ পর্যন্ত একজন অপরাধীর মতো ক্যালভারির ক্রুশে ঝুলানো হয়েছিল। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত, খ্রীষ্টের প্রথম দেহ ধর্মনিরপেক্ষ জগতের পাশাপাশি ধর্মীয় জগতের নিন্দার সম্মুখীন হয়েছিল।

আজ খ্রীষ্টের দেহের যেকোনো প্রকৃত প্রকাশকে জগত এবং বাবিলনীয় খ্রীষ্টীয়জগতের কাছ থেকে একই নিন্দা ভোগ করতে হবে। যদি আমাদের স্থানীয় মণ্ডলীর কাছে ‘খ্রীষ্টের নিন্দার’ এমন আবরণ না থাকে, তাহলে এটা সম্ভব যে আমরা আপোষকারী হয়ে পড়েছি, এবং “বাবিলনের শিবির থেকে” বের হইনি (ইব্রীয় ১৩:১৩)। তবে, খ্রীষ্টের নিন্দা এবং আমাদের নিজস্ব পাপ, মূর্খতা বা মৃদুউষ্ণতার ফলে সৃষ্ট যেকোনো নিন্দার মধ্যে বিরাট পার্থক্য রয়েছে। আমাদের একটিকে অন্যটির সাথে ভুল বোঝা উচিত নয়।

প্রভু যীশুর সম্পর্কে লেখা ছিল যে, “তাঁহার এমন রূপ কি শোভা নাই যে, তাঁহার প্রতি দৃষ্টি করি...তিনি অবজ্ঞাত হইলেন আর আমরা তাঁহাকে মান্য করি নাই”(যিশাইয় ৫৩:২, ৩)। তাঁর মহিমা তাঁর অভ্যন্তরীণ জীবনে ছিল—অনুগ্রহ ও সত্যে পরিপূর্ণ—যা অধিকাংশ লোকের কাছ থেকে লুকানো ছিল (যোহন ১:১৪)। আমাদের স্থানীয় মণ্ডলীও আকর্ষণীয় হওয়া উচিত নয় - জগতের কাছে বা বাবিলনীয় খ্রীষ্টীয়জগতের কাছেও নয়। মণ্ডলী কেবল তাদের কাছে আকর্ষণীয় হওয়া উচিত যারা ঈশ্বরীয় জীবন খুঁজতে আসেন। তাঁবুর ভেতরের দিকে সুন্দর পর্দা ছিল। কিন্তু বাইরের আবরণটি ছিল গাঢ় বাদামী রঙের ভেড়ার চামড়ার তৈরি, যা ধুলো ও ময়লায় ঢাকা ছিল। সৌন্দর্য ছিল তাঁবুর ভেতরে, ভেতরের পর্দায়। খ্রীষ্টের কনে “অন্তঃপুরে সর্ব্বতোভাবে সুশোভিতা” (গীতসংহিতা ৪৫:১৩)। এবং “সকল প্রতাপের উপরে চন্দ্রাতপ (অপমানের আবরণ) থাকিবে” (যিশাইয় ৪:৫)।

এখানেই মণ্ডলীর নেতাদের একটি বিরাট দায়িত্ব রয়েছে। তারা যেভাবে মণ্ডলী পরিচালনা করে নিয়ে যাচ্ছেন তার উপর নির্ভর করে মণ্ডলীটি কি প্রভু যীশুর মতো হবে যাকে মানুষ সম্মান করেনি, নাকি বিশ্বের দ্বারা প্রশংসিত ও সম্মানিত হবে। আমরা যদি জগৎ বা অন্যান্য জাগতিক ও প্রাণিক খ্রীষ্টানদের কাছ থেকে প্রশংসা চাই, তাহলে আমরা অবশ্যই বাবিল নির্মাণ করব। যখন আমরা সাধারণভাবে খ্রীষ্টীয়জগতের কাছে জনপ্রিয় এবং গৃহীত হই, তখন এটা নিশ্চিত যে আমরা প্রভু যীশুর পদাঙ্ক সম্পূর্ণরূপে হারিয়ে ফেলছি।

প্রভু যীশু বলেছিলেন, “ধন্য তোমরা, যখন লোকে আমার জন্য তোমাদিগকে নিন্দা ও তাড়না করে এবং মিথ্যা করিয়া তোমাদের বিরুদ্ধে সর্বপ্রকার মন্দ কথা বলে। আনন্দ করিও ও উল্লাসিত হইও, কেননা স্বর্গে তোমাদের পুরস্কার প্রচুর; কারণ তোমাদের পূর্বে যে ভাববাদীগণ ছিলেন, তাঁহাদিগকে তাহারা সেই মত তাড়না করিত” (মথি ৫:১১,১২)। হেরোদ এবং তার সৈন্যরা ২০০০ বছর আগে খ্রীষ্টের প্রথম দেহ, নবজাতক যীশুকে হত্যা করতে তৎপর হয়েছিল। এমনকি আজও অনেক জায়গায় এমন অনেক লোক আছে যারা একেবারে শুরুতেই খ্রীষ্টের দেহ ধ্বংস করতে তৎপর। ঈশ্বরের কণ্ঠস্বরের প্রতি সংবেদনশীল হয়ে এবং ঈশ্বর তাকে যা করতে বলেছিলেন তা পালন করতে ইচ্ছুক হয়ে যোষেফ সেই দেহকে রক্ষা করেছিলেন (মথি ২:১৩-১৫)। আমরা যারা খ্রীষ্টের মণ্ডলীর দায়িত্বে আছি, তাদের যোষেফের মতো হতে হবে। আমাদের ‘শ্রোতা’ হতে হবে - পবিত্র আত্মা আমাদের যা বলেন তা শুনতে হবে এবং আমাদের যা বলা হয় তা পালন করতে তৎপর হতে হবে। যদি আমরা না শুনি এবং বাধ্য না হই, তাহলে আমাদের এলাকার খ্রীষ্টের দেহের কোনো না কোনোভাবে ক্ষতি হবে—এবং শেষ দিনে এর জন্য আমাদের দায়ী করা হতে পারে। এই বিষয়ে আমাদের দায়িত্ব গুরুত্ব সহকারে নিতে হবে, কারণ আমাদের উপর অর্পিত প্রতিটি প্রাণের জন্য ঈশ্বরের কাছে আমাদের হিসাব দিতে হবে (ইব্রীয় ১৩:১৭)।