WFTW Body: 

প্রেরিত যাকব, যাকব ১:২ পদে বলেছেন "তোমরা যখন নানাবিধ পরীক্ষায় পড়, তখন তাহা সর্বতোভাবে আনন্দের বিষয় জ্ঞান করিও।" যদি আপনার বিশ্বাস সত্য হয়, তবে আপনি যখন পরীক্ষার মুখোমুখি হন তখন আপনি আনন্দিত হবেন- বিষয়টি এই রকম একটি ১০০০ টাকার নোট সত্য কিনা তা যাচাই করার জন্য স্ক্যানারের নীচে রাখা। কেন আপনি এটির জন্য ভয় করবেন? আপনার বিশ্বাস যদি নকল হয় তবে তা খ্রীষ্টের বিচার-আসনের সামনে না জেনে এখনই জানা ভাল। সুতরাং এটা ভাল যে ঈশ্বর আপনাকে এখনই কিছু পরীক্ষার মধ্যে নিয়ে এসেছেন, যাতে আপনার বিশ্বাসটি খাঁটি কিনা তা আপনি নিশ্চিতরূপে জানতে পারবেন। সুতরাং 'আনন্দ করো'! যখন আপনি কোনও বাড়ি তৈরি করছেন, ঘর তৈরির পরে ভূমিকম্প আসার থেকে বরং ঘরের ভিত্তি স্থাপনের সময়ই কী ভূমিকম্প আসা ভাল নয়? যদি ভিত্তিটি নড়বড়ে হয়, আপনি অবিলম্বে এটি সংশোধন করতে পারবেন। একই ভাবে, খ্রীষ্টীয় জীবনের একেবারে শুরুতে পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যাওয়া ভাল। আপনি হয়তো বলবেন "আমি প্রভুর উপর ভরসা করি"। কিন্তু আপনি যখন কিছু একটা আর্থিক সমস্যায় পড়েন, তখন আপনি দুশ্চিন্তা ও অভিযোগ করা শুরু করে দেন। হতে পারে, আপনি অসুস্থ হলেন এবং আপনি ঈশ্বরকে প্রশ্ন করা শুরু করলেন। অথবা, সম্ভবত আপনি কোন মনুষ্যের কাছ থেকে কিছু বিরোধিতা পেয়েছেন এবং আপনি নিরুৎসাহিত হয়ে আপনার বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেন - এই সমস্ত পরীক্ষাগুলি আপনাকে প্রমাণ করবে যে আপনার বিশ্বাসটি সত্যই 'আসল' ছিল না।

উপরন্তু, পরীক্ষাগুলি আমাদের মধ্যে ধৈর্য্যের গুণও তৈরি করে। আমাদের সর্বদা আমাদের বিশ্বাসের সাথে ধৈর্য (সহনশীলতা) প্রয়োজন। যদি আমরা এই ধৈর্যকে আমাদের মধ্যে সম্পূর্ণ কাজ করার অনুমতি দিই, এটি আমাদের নিখুঁত এবং সম্পূর্ণ করে তুলবে এবং কোনও কিছুরই অভাব থাকবেনা (যাকব ১:৪)। এই লক্ষ্যে বিবেচনা করুন - " যেন তোমরা সিদ্ধ ও সম্পূর্ণ হও, কোন বিষয়ে তোমাদের অভাব না থাকে। " আপনি কি সেখানে পৌঁছোতে চান? সেই পথে অনেক পরীক্ষা রয়েছে। সেখানে যাওয়ার আর অন্য কোনও উপায় নেই। আমরা এখনও সেখানে পৌঁছোতে পারিনি। এবং তাই আমাদের আরও অনেক পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হবে সেখানে পৌঁছোতে হলে। যদি আমি আমার জীবনে কোনও আধ্যাত্মিক মূল্য অর্জন করে থাকি, তার একমাত্র কারন হলো প্রভু আমাকে সেই সকল পরীক্ষার মধ্য দিয়ে নিয়ে এসেছেন। তবে 'সিদ্ধ, সম্পূর্ণ ও কোন কিছুই না অভাবের'লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে আমাদের কে আরও অনেক পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হবেই। এটি আমাদের সবার জন্য ঈশ্বরের দেওয়া লক্ষ্য। যদি আপনি কিছু পরীক্ষার মাধ্যমে উপলব্ধি করেন যে, আপনার বিশ্বাস সত্য নয় তবে হতাশ হবেন না। বরং, এটি আপনাকে উপলব্ধি করিয়ে দেওয়ার জন্য ঈশ্বরের ধন্যবাদ করুন এবং তাঁর কাছে প্রার্থনা করুন সত্যিকারের বিশ্বাস প্রদানের জন্য। ঈশ্বর আপনাকে তা দেবেন।

প্রেরিত পিতর, তাঁর ১ পিতর ১:৭ পদে বলেছেন সমস্ত পরীক্ষার উদ্দেশ্য হলো আপনার বিশ্বাসের সত্যতা প্রমাণ করা - বিষয়টি "আগুনে পরীক্ষা করা সোনার" মতো। পৃথিবীর গভীরতা থেকে যখন সোনা খনন করে তোলা হয় তখন তা খাঁটি হয় না। এটি শুদ্ধ করার একমাত্র উপায় হল আগুনে ফেলে দেওয়া। আপনি সাবান এবং জল দিয়ে ধুয়ে সোনাকে শুদ্ধ করতে পারবেন না। এই প্রক্রিয়া টি কেবল ময়লা অপসারণ করে। তবে সোনায় মিশ্রিত ধাতুগুলিকে অপসারণ করতে হলে এটি কে আগুনে ফেলা আবশ্যক। ফলে এতে সমস্ত মিশ্রণ ধাতুগুলি গলে যায় এবং খাঁটি সোনার উপস্থিতি ঘটে। আপনি যে পরীক্ষাগুলি অতিক্রম করছেন সেগুলি অগ্নিময় হতে পারে। এটি এতই যন্ত্রণা দায়ক হতে পারে যে আপনার মনে হবে যেন আপনাকে আগুনে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এর একমাত্র উদ্দেশ্য হ'ল আপনার জীবনে থাকা অশুদ্ধ বিষয়গুলির থেকে আপনাকে পরিত্রাণ করা।

ঈশ্বর তাঁর সমস্ত সন্তানকেই পরীক্ষার মুখোমুখি হতে দেন। তাঁর মহান প্রজ্ঞায় কখন সেগুলি প্রেরণ করবেন, তিনি তা জানেন। যখন আমরা প্রভুর সামনে দাঁড়াব, আমরা উপলব্ধি করব যে, আমাদের জীবনে তিনি যে সকল পরীক্ষার অনুমতি দিয়েছিলেন, তাতে তিনি কোন কিছুই ভুল করেনি। তিনি যে আমাদের জীবনের প্রতিটি একক পরীক্ষার অনুমতি দিয়েছিলেন, আমরা সেই দিন উপলব্ধি করব, তার উদ্দেশ্য ছিল আমাদেরকে সোনার মত শুদ্ধ করে তোলা। যদি আপনি এটি বিশ্বাস করেন, তবে আপনি সর্বদা প্রভুর প্রশংসা করবেন। আপনার পরীক্ষার মাঝে আপনি অবিস্মরণীয় আনন্দ পাবেন - এবং এটি আপনার আত্মার পরিত্রাণের ফলস্বরূপ হবে। এটিই সেই পরিত্রাণ যা পূর্বকালে ভাববাদীরা বুঝতে চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তা পারেননি। এমনকি স্বর্গদূতেরা ও এটি দেখার জন্য আকাঙ্ক্ষা করছেন (১ পিতর ১:১২)। কিন্তু এখন স্বর্গ থেকে প্রেরিত পবিত্র আত্মায় অভিষিক্ত লোকেরা যারা এই সুসমাচার প্রচার করেন। সুতরাং, পিতর বলেছেন, যেহেতু আমাদের কাছে এইরকম অপূর্ব (বিস্ময়কর) সুসমাচার রয়েছে এবং আমাদের কেবল এই অল্প সময়ের জন্যই এই পরীক্ষাগুলি মধ্যে দিয়ে যেতে হবে, তাই খ্রীষ্টের আগমনের অপেক্ষায় আমাদের মনকে আরও তীক্ষ্ণ করা উচিত এবং আমরা যে পরীক্ষাগুলির মুখোমুখি হই তাতে আমরা যেন বিরক্ত (হতাশা) না হই (১ পিতর ১:১৩)।