WFTW Body: 

২ করিন্থীয় ১০:৫ পদে প্রেরিত পৌল "আমাদের চিন্তা-ভাবনাময় জীবনে যে দুর্গসমূহ আছে" সেই বিষয়ে কথা বলেছেন। আমাদের মাংসের অভিলাষগুলি মনের মধ্যে নোংরা চিন্তা-ভাবনা এবং স্বার্থপর চিন্তা-ভাবনা তৈরি করে, যা দৃঢ় দুর্গের মতো। সেগুলি আমাদেরকে দিনের বেলায় স্বার্থপরভাবে জীবনযাপন করিয়ে আমাদের অভিলাষগুলিকে সন্তুষ্ট করে এবং রাতের বেলায় আমরা যখন ঘুমন্ত অবস্থায় থাকি, তখন এই দুর্গগুলি থেকে নোংরা ভাবনাগুলি স্বপ্ন হিসাবে বেরিয়ে আসে। আমরা চিরকাল এইভাবে বেঁচে থাকি এটাই কি ঈশ্বরের ইচ্ছা? না, ঈশ্বরের ইচ্ছা হল খ্রীষ্টের আনুগত্যে আমরা প্রতিটি চিন্তা-ভাবনাকে নিয়ে আসি। ঈশ্বরের দেওয়া আধ্যাত্মিক অস্ত্রের সাহায্যে আমরা এই দুর্গগুলি ধ্বংস করতে পারি। এই দুর্দান্ত অস্ত্রগুলির মধ্যে একটি হল ঈশ্বরের বাক্য যা এই দুর্গগুলিকে ধ্বংসের জন্য শক্তিশালী অস্ত্র (২ করিন্থীয় ১০:৪)। এইভাবে আমরা "সমুদয় চিন্তাকে বন্দি করিয়া খ্রীষ্টের আজ্ঞাবহ করিতেছি"।

আমরা যখন ঈশ্বরের বাক্যে আমাদের মনকে আরও পরিপূর্ণ করে তুলবো, আমরা দেখতে পাব যে এই দুর্গগুলি একে একে ধ্বংস হচ্ছে - এবং এই দুর্গগুলির অভ্যন্তরে সৈন্যরা (চিন্তা-ভাবনাগুলি) ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। যুবক হিসাবে, আমিও আপনাদের সবার মত নোংরা চিন্তা-ভাবনার সঙ্গে লড়াই করেছি। আমার যৌবন কালে এই সমাধানটি খুঁজে পেয়েছিলাম। আমি ঈশ্বরের বাক্য পড়ে এবং ধ্যান করে আমার মনকে প্লাবিত করেছিলাম। আমাদের মন হল নোংরা জলে ভরা বাটির মতো, কারণ আমাদের অপরিবর্তিত দিনে আমরা এতে প্রচুর জঘন্য জিনিস এবং আবর্জনা ফেলেছি। তবে আমরা যদি সেই বাটিতে এক কলসি পরিষ্কার জল ঢালি, ধীরে ধীরে সেই নোংরা জলটি উপচে পড়ে এবং তা লঘু হয়ে যায়। এইভাবে বাটির জলটি পরিষ্কার এবং আরও বেশী পরিষ্কার হয়ে উঠে। এটি দীর্ঘ সময় নিতে পারে। যদি আমাদের মনের মধ্যে ঈশ্বরের বাক্য ঢালতে থাকি তবে সেই বাক্য কয়েক বছর ধরে ধীরে ধীরে আমাদের মনকে পরিষ্কার করে তুলবে। কিন্তু যদি আমরা যখন-তখন আবার সেই বাটিতে অল্প কিছু আবর্জনা ফেলতে থাকি, তবে পরিষ্কার করার প্রক্রিয়াটি বিলম্বিত হবে। আমরা ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতে পারি যেন তাঁর অনুগ্রহের মাধ্যমে আমাদের সমস্ত চিন্তা-ভাবনাকে খ্রীষ্টের আজ্ঞাবহ করতে পারি।

২ করিন্থীয় ১১: ২-৩ পদে পৌল কীভাবে সেই করিন্থীয় খ্রীষ্টানদেরকে "মেষশাবকের বিবাহের" দিনে প্রভুর কাছে কুমারী কন্যা হিসাবে উপস্থাপন করতে চান সেই সম্পর্কে কথা বলেছেন। আর সেই কারনে তিনি খুব ঈর্ষান্বিত হয়েছিলেন যেন তারা পথে অন্য কারও প্রেমে না পড়ে। অব্রাহামের সেবক এলিজারের গল্পটি বিবেচনা করুন, রিবিকাকে ইসহাকের কাছে উপস্থাপনের জন্য তাকে দীর্ঘ পথ (উর থেকে কনান পর্যন্ত প্রায় ১৫০০ কিলোমিটারের) যাত্রা করতে হয়েছিল। সেই যাত্রায়, কোনও সুদর্শন যুবকেরা যদি এসে রিবিকাকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে, সেজন্যে এলিজার রিবিকাকে এই বলে সতর্ক করে দিয়েছিলেন, "এই লোকদের দ্বারা আকৃষ্ট হও না। আমি তোমাকে ইসহাকের কাছে এক কুমারী কন্যা হিসাবে উপস্থাপন করব"। পৌল সেই একইভাবে প্রভু যীশুর কাছে করিন্থীয় মণ্ডলীকে সংরক্ষণ করতে চেয়েছিলেন। এটাই পবিত্র ঈর্ষা যা ঈশ্বরের প্রত্যেক সেবককে অবশ্যই তার পালের জন্য থাকতে হবে। তাকে অবশ্যই বলতে হবে, "তোমরা যীশুর জন্য সংরক্ষিত। অর্থ, অবৈধ যৌনতা বা পার্থিব সম্মানের দ্বারা আকৃষ্ট হইও না। এগুলি আপনাকে আকর্ষণ করার চেষ্টা করবে। তবে আপনাকে অবশ্যই তাদের অগ্রযাত্রাকে প্রতিহত করতে হবে এবং নিজেকে শুদ্ধ রাখতে হবে"। তারপরে পৌল আরও বলেছিলেন, "আমি আশঙ্কা করি যে শয়তান যেভাবে এদনে হবার কাছে এসেছিল সেইভাবেই খ্রীষ্টের প্রতি সহজ এবং খাঁটি নিষ্ঠা থেকে আপনার হৃদয়কে দূরে সরিয়ে নিয়ে যাবে"।

কখন কেউ পিছলে পড়ে যায় বা পথভ্রষ্ট হয়? যখন তারা কোনও ভ্রান্ত মতবাদকে বিশ্বাস করা শুরু করে বা তারা যখন কোন ধর্মানুষ্ঠানের সাথে যোগ দেয় তখনই কি হয়? ২ করিন্থীয় ১১: ৩ পদ অনুযায়ী, যেই মুহুর্তে আমারা খ্রীষ্টের প্রতি নিষ্ঠা হারাই, তখনই আমরা পথভ্রষ্ট হয়ে পড়ি। খ্রীষ্টের প্রতি যারা ভক্তি হারিয়েছে এমন প্রতিটি বিশ্বাসী ইতিমধ্যে পথভ্রষ্ট হয়েছে।

ঈশ্বরের পালের সেবক হিসাবে আমাদের কাজ হল নিষ্ঠার সাথে যীশু খ্রীষ্টের ভক্তির প্রতি মেষদের সংরক্ষণ করা। এটিই খ্রীষ্টান জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। শয়তান ক্রমাগত ঐকান্তিকভাবে প্রভু যীশুকে ভালবাসা থেকে বিশ্বাসীদেরকে বিপথগামী (পথভ্রষ্ট) করতে সর্বদা চেষ্টা করে। খ্রীষ্টের প্রতি আমাদের ঐকান্তিক ভালবাসা যদি হারিয়ে যায় তবে সুসমাচার প্রচার বা শিক্ষাদান বা প্রভুর জন্য অন্য কোনও সেবায় জড়িত থাকার কোন মূল্য নেই। এটাই ছিল ইফিষস্থ মণ্ডলীর দূতের (প্রাচীনদের) বিরুদ্ধে প্রভুর একমাত্র অভিযোগ (প্রকাশিত বাক্য ২: ৪)।