লিখেছেন :   জ্যাক পুনেন বিভাগগুলি :   মণ্ডলী শিষ্য
WFTW Body: 

প্রভু যীশু প্রথম যে ভুল মনোভাবের কথা বলেছিলেন তা হল ক্রোধ। আমাদের জীবন থেকে ক্রোধ দূর করতে হবে। দ্বিতীয়টি, যা সমস্ত খ্রীষ্টানদের (এমনকি সমস্ত মানুষের) আরেকটি বড় সমস্যা, তা হল যৌন লালসাপূর্ণ চিন্তাভাবনা - যেমন যখন একজন পুরুষ একজন মহিলার দিকে লালসার দৃষ্টিতে তাকায়। মথি ৫:২৭-২৮ পদে বলা হয়েছে যে পুরাতন নিয়মের মানদণ্ড ছিল “তুমি ব্যভিচার করিও না”। যতক্ষণ না আপনি এমন কোন মহিলাকে স্পর্শ করছেন যে আপনার স্ত্রী নয়, এবং তার সাথে ব্যভিচার না করছেন, ততক্ষণ আপনি ঠিক আছেন। পুরাতন নিয়মের মানদণ্ড ছিল এটাই।

কিন্তু প্রভু যীশু এই মানদণ্ডকে উঁচু করে দিয়েছেন। ঠিক যেমন মোশি পাহাড়ে উঠে দশটি আজ্ঞা নিয়ে নেমে এসেছিলেন, ঠিক তেমনই প্রভু যীশু পাহাড়ে উঠে ধর্মোপদেশ প্রচার করেছিলেন। তিনি সেই দশটি আজ্ঞার স্তরকে সেই আত্মার আজ্ঞাতে উন্নীত করেছিলেন। তিনি দেখিয়েছিলেন যে হত্যা হল ক্রোধের মতো, আর ব্যভিচার হল চোখের লালসা - অন্য কথায়, আপনি মনে মনে সেই মহিলার সাথে ব্যভিচার করছেন। প্রভু যীশু বলেছিলেন যে ঈশ্বরের দৃষ্টিতে, এটা ব্যভিচার কারণ আপনার আভ্যন্তরীণ জীবন অপবিত্র।

ফরীশীদের বৈশিষ্ট্য ছিল যে তারা তাদের বাহ্যিক জীবনকে পবিত্র রাখত - পানপাত্রের বাইরের দিক। কোন খ্রীষ্টান ব্যক্তি তার বাহ্যিক জীবনকে পরিষ্কার রাখে কিন্তু তার ভেতরের চিন্তাভাবনাকে অপবিত্র রাখে, সে একজন ফরীশী, এবং সে জানে বা না জানে, কিন্তু সে নরকের পথে। আমাদের অনেকেই এর গুরুত্ব বুঝতে পারি না।

বিগত ৩৫ বছরে ধরে আমি মুষ্টিমেয় পাপের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি প্রচার করেছি, বিশেষ করে দুটি পাপের বিরুদ্ধে - ক্রোধ এবং যৌন পাপ, লালসাপূর্ণ চিন্তাভাবনা। লোকেরা আমাকে জিজ্ঞাসা করেছে কেন আমি এই দুটি পাপের বিরুদ্ধে এত কথা বলি। আমি তাদের বলি কারণ প্রভু যীশু এই দুটি পাপের কথা উল্লেখ করেছিলেন যখন তিনি প্রথম বলেছিলেন যে আমাদের ধার্মিকতা অবশ্যই শাস্ত্রী ও ফরীশীদের ধার্মিকতার চেয়েও বেশি হতে হবে। আপনার ধার্মিকতা আপনার চারপাশের সমস্ত ফরীশীদের (যারা খুবই ধার্মিক) চেয়েও বেশি হওয়া উচিত, এই কথা বলার পরপরই, প্রভু যীশু প্রথম যে দুটি পাপের কথা উল্লেখ করেছিলেন তা হল ক্রোধের ক্ষেত্রে এবং যৌন লালসাপূর্ণ চিন্তাভাবনার ক্ষেত্রে। এটাই প্রথম কারণ, যে কারণে আমি সেগুলির বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি প্রচার করি।

এই দুটি পাপের বিরুদ্ধে আমি কেন প্রচার করি তার দ্বিতীয় কারণ হল, এই দুটি পাপের কথা প্রভু যীশু পর্বতে দত্ত উপদেশে বলেছিলেন যেখানে তিনি বলেছিলেন যে এগুলিতে লিপ্ত হওয়ার বিপদ নরকে যাওয়া। অধিকাংশ মানুষই তা বিশ্বাস করে না। পর্বতে দত্ত উপদেশে প্রভু যীশু কেবল দুই বার নরকের কথা বলেছিলেন, যা এই দুটি পাপের সাথে সম্পর্কিত ছিল (মথি ৫:২২, ২৯-৩০), তাই এটি আমাদের বলে যে এই দুটি পাপ অবশ্যই অত্যন্ত গুরুতর।

এটা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ যে, পর্বতে দত্ত উপদেশে প্রভু যীশু মাত্র দুই বারই নরক সম্পর্কে কথা বলেছিলেন, তা ছিল ক্রোধ এবং যৌন লালসাপূর্ণ চিন্তাভাবনার সাথে সম্পর্কিত। তাই ঈশ্বরের দৃষ্টিতে এগুলো অবশ্যই খুবই গুরুতর পাপ এবং আজ এগুলোর বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত প্রচার নেই। ক্রোধ কাটিয়ে ওঠার বিষয়ে শেষ কবে কোন বার্তা শুনেছেন মনে করতে পারছেন? আমার মনে হয় না আমি আমার পুরো জীবনে এই বিষয়ে কোন বার্তা শুনেছি। ৫০ বছরের ও অধিক ধরে আমি খ্রীষ্টীয় জগতে ঘুরে বেড়াচ্ছি, টেলিভিশন, টেপ, সিডি এবং অনেক গির্জায় অনেক প্রচারকের কথা শুনেছি। তবুও আমি খুব কমই যৌন লালসাপূর্ণ চিন্তাভাবনা কাটিয়ে ওঠার বিষয়ে কোন বার্তা শুনেছি। কেন শয়তান এই দুটি ক্ষেত্রে প্রচারকদের প্রচার করতে বাধা দিয়েছে?

এর প্রধান কারণ হলো, প্রচারকরা নিজেরাই এগুলোর উপর বিজয় পাননি। যদি তারা এখনও নিজেদেরকে দাসত্বে আবদ্ধ করে রাখেন, তাহলে তারা কীভাবে এটি নিয়ে কথা বলবেন? দ্বিতীয়ত, প্রচারকরা প্রায়শই তাদের মণ্ডলীর বাইরের লোকদের সুন্দর দেখানো এবং তাদের থেকে অর্থ সংগ্রহ করার ক্ষেত্রে বেশি আগ্রহী হন। তাই এই দুটি বিষয়ের উপর জোর দেওয়া খুবই প্রয়োজন, যেগুলোর সম্পর্কে প্রভু যীশু এত কথা বলেছেন। এই দুটি পাপই একজন ব্যক্তিকে অবশেষে নরকে নিয়ে যাবে বলে প্রভু যীশু বলেছিলেন এবং এটি খুবই গুরুতর একটি বিষয়।

প্রভু যীশু দশটি আজ্ঞাকে নিয়েছিলেন এবং লোকেদের সেই আজ্ঞাগুলির পিছনে কী লুকিয়ে আছে তা দেখিয়েছিলেন।

আপনার স্ত্রী নন এমন কোনও মহিলার প্রতি লালসা করা পাপ, তা বুঝতে মথি ৫ অধ্যায়ে আসার দরকার নেই। প্রভু যীশু বলেছিলেন যে, যে কেউ (এবং ব্যক্তি বিশ্বাসী বা অবিশ্বাসী তা বিবেচ্য নয়) যেকোন মহিলার দিকে লালসাপূর্ণ দৃষ্টিতে তাকায়, সে ইতিমধ্যেই তার হৃদয়ে তার সাথে ব্যভিচার করেছে। লালসার অর্থ হল তীব্র আকাঙ্ক্ষা। তিনি বলেছিলেন যে এটি এত গুরুতর যে যদি আপনার ডান চোখ আপনাকে এই ক্ষেত্রে হোঁচট খাওয়ায়, তবে আপনাকে অবশ্যই এটি উপড়ে ফেলতে হবে! যখন আপনি আপনার চোখ দিয়ে কামনা-বাসনার প্রলোভনে পড়েন, তখন আপনাকে অবশ্যই উগ্রপন্থী হতে হবে। আপনাকে এমন আচরণ করতে হবে যেন আপনি একজন অন্ধ। এটি কাটিয়ে ওঠার এটাই একমাত্র উপায়। আপনার এটাকে হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয় এবং বলা উচিত নয়, “আমি কেবল ঈশ্বরের সৃষ্টির সৌন্দর্যের প্রশংসা করছি।” এই পাপকে সমর্থন দেওয়ার অনেক উপায় আছে, এবং অনেকেই তা করে। যখন একজন ব্যক্তি এই ক্ষেত্রে অসাবধান থাকে, তখন সময়ের সাথে সাথে সে শারীরিক ব্যভিচারেও লিপ্ত হয়, যেমনটি সারা বিশ্বের অনেক যাজক করে থাকেন।

মথি ৫ অধ্যায়ে প্রভু যীশু যা শিক্ষা দিয়েছিলেন তা নতুন কিছু ছিল না যা ঈশ্বর-ভয়শীল লোকেরা জানত না। আমি নিশ্চিত যে যোহন বাপ্তাইজক প্রভু যীশুর বলার আগেই তা জানতেন। ইয়োব তা জানতেন (ইয়োব ৩১:১, ৪, ১১)। যে কেউ ঈশ্বরকে শ্রদ্ধা করেন, এমনকি যদি তার কাছে ইয়োবের মতো বাইবেল নাও থাকে, তিনি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হবেন যে আমি যদি এমন কোনও মহিলার দিকে যৌন কামনার দৃষ্টিতে তাকাই যিনি আমার স্ত্রী নন, তবে এটি ঈশ্বরের কাছে পাপ। আমাদের ভেতরে এমন কিছু আছে যা আমাদের বলে যে এটা ভুল। এটা ঈশ্বর আপনাকে যা দেননি তা চুরি করার মতো। এমনকি যদি আপনার কাছে বাইবেল নাও থাকে, তবুও আপনার বিবেক আপনাকে বলবে যে যখন আপনি এমন কিছু চুরি করেন যা আপনার নয়, তখন এটি একটি পাপ। এটি বলার জন্য আপনার কোনও আদেশের প্রয়োজন নেই। ঈশ্বরের প্রতি শ্রদ্ধাই আপনাকে সেটা বলবে। প্রভু যীশু যা শিক্ষা দিয়েছিলেন তা দেখার সময় এটি মনে রাখা একটি চমৎকার বিষয়।

আজকাল এত বিশ্বাসী যৌন কামনা-বাসনার বিষয়টিকে এত হালকাভাবে কেন নেয়? কারণ ঈশ্বরের প্রতি শ্রদ্ধার মৌলিক অভাব রয়েছে, যেমনটা ইয়োবের ছিল। আজকের খ্রীষ্টানদের বাইবেলের জ্ঞান আছে, কিন্তু ঈশ্বরের প্রতি শ্রদ্ধা নেই। এমন কিছু লোক আছে যারা বাইবেল স্কুলে যায় এবং বাইবেল অধ্যয়ন করে ধর্মতত্ত্বে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করে, তবুও নারীদের প্রতি লালসার আকাঙ্ক্ষা পোষণ করে। এটি আমাদের শিক্ষা দেয় যে ধর্মগ্রন্থের উপর জ্ঞান অর্জন করা এবং বাইবেল সেমিনারী থেকে “ডিগ্রী অর্জন” আপনাকে পবিত্র করে না। আজ প্রচুর বাইবেল জ্ঞান রয়েছে, প্রচুর অনুবাদ এবং নির্ঘণ্ট রয়েছে। এমনকি আমাদের মোবাইল ফোন এবং সিডিতেও বাইবেল রয়েছে, যা লোকেরা গাড়ি চালানোর সময় শুনতে পারে, ইত্যাদি। তবুও এই সমস্ত জ্ঞানের প্রাচুর্য সত্ত্বেও, ঈশ্বরের প্রতি শ্রদ্ধা খুব কমই রয়েছে।

পর্বতে দত্ত উপদেশে, প্রভু যীশু এমন অনেক বিষয় শিখিয়েছিলেন যা আমরা পর্বতে দত্ত উপদেশ না পড়েও জানতে পারি, যদি আমাদের ঈশ্বরের প্রতি শ্রদ্ধা থাকে। এর মধ্যে কিছু বিষয় আমাদের কাছে খুব স্পষ্ট: ক্রোধ পাপ, নারীর প্রতি লালসার পাপ, এবং আরও অনেক কিছু এখানে লেখা আছে। অতএব, জ্ঞানের অভাবের কারণে আপনি পাপ করে চলছেন না; বরং ঈশ্বরের প্রতি শ্রদ্ধার অভাবের কারণেই। ঈশ্বরের প্রতি শ্রদ্ধা হল প্রজ্ঞার শুরু। এটি খ্রীষ্টীয় জীবনের “অ আ ক খ” এবং যদি আমাদের তা না থাকে, তাহলে বাইবেল অধ্যয়ন বা বার্তা শোনা আমাদের পবিত্র করবে না।