WFTW Body: 

সমস্ত বিশ্বাসীদের ভবিষ্যদ্বক্তা হতে আহ্বান করা হয় নি। তবে সমস্ত বিশ্বাসীদের কে অধীর আগ্রহে ভবিষ্যদ্বাণী করার ইচ্ছা পোষণ করার জন্য আদেশ করা হয়েছে (১ করিন্থীয়- ১৪:১)। এটি নতুন-নিয়মের যুগে পবিত্র আত্মার প্রসারিত ফলাফল গুলির মধ্যে একটি (প্রেরিত-২:১৭, ১৮)। নতুন-নিয়ম অনুসারে, ভবিষ্যদ্বাণী করার অর্থ হ'ল লোকদের উত্সাহিত করার জন্য, তাদেরকে আহ্বান জানানোর জন্য এবং তাদের গড়ে তুলার জন্য কথা বলা (১ করিন্থীয়- ১৪:৩)। আত্মার দ্বারা পরিপূর্ণ সকল বিশ্বাসীরা সংক্ষিপ্তভাবে মণ্ডলীর সভায় ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারেন (১ করিন্থীয়- ১৪:৩১)। তবে ভবিষ্যদ্বাণীতে কি বলা হয়েছিল, অন্যান্য বিশ্বাসীরা অবশ্যই বিচার করুক এবং এটির কতটা ঈশ্বরের থেকে প্রাপ্ত এবং কতটা মানুষের মনের তৈরি তা উপলব্ধি করুক - শাস্ত্রের সাথে মিলিয়ে সমস্ত কিছু যাচাই করে দেখুক (১ করিন্থীয়- ১৪:২৯)।

ঈশ্বর তাঁর মণ্ডলীর মধ্যেও কিছু ভবিষ্যদ্বক্তা নিযুক্ত করেছেন। এই লোকেদেরকে ঈশ্বর মণ্ডলীর কাছে খ্রীষ্টের দেহ গড়ার জন্য উপহার হিসাবে দিয়েছেন। ভবিষ্যদ্বক্তারা বিশ্বাসীদের আহ্বান জানানোর জন্য ও শক্তিশালী করার জন্য দীর্ঘ সময় প্রচার করবেন। আমরা পড়েছি যে "যিহূদা এবং সীল, আপনারাও ভাববাদী ছিলেন বলিয়া, অনেক কথা দ্বারা ভ্রাতৃগণকে আশ্বাস দিলেন এবং সুস্থির করিলেন" (প্রেরিত-১৫:৩২)। তবে মণ্ডলীতে খুব অল্প সংখ্যক বিশ্বাসীকেই ভবিষ্যদ্বক্তা হতে ডাকা হয় (১ করিন্থীয়-১২:২৮; ইফিসীয় ৪:১১) - এবং প্রত্যেককে অবশ্যই এটি মনে রাখতে হবে।

মণ্ডলীর-সভায় ভবিষ্যদ্বাণী শোনার বিষয়টি হল একটি কলা খাওয়ার মতো। আমাদেরকে অবশ্যই কলার ছালটা ফেলে দিতে হবে (যা মানুষের মন গড়া), কেবল অভ্যন্তরীন অংশটাকেই খেতে হবে (যা ঈশ্বরের কাছ থেকে আসে)। একজন নবীন বিশ্বাসীদের ক্ষেত্রে ছালটা খুব মোটা হবে এবং অভ্যন্তরীন অংশটা যা ঈশ্বরের কাছ থেকে সেটা খুব কম থাকবে। তবে আমরা সেই সামান্য গ্রহণ করতে পেরেও খুশি। তবে অধিক পরিপক্ক বিশ্বাসী ক্ষেত্রে, ছালটা খুব পাতলা হবে এবং ঈশ্বরের কাছ থেকে অনেক কিছুই থাকবে। বিশ্বাসী বোনরাও ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারেন (প্রেরিত ২:১।, ১৮)। পঞ্চাশত্তমীর দিন নতুন নিয়মের উদ্বোধনের পরে আমরা কোনও মহিলা ভবিষ্যদ্বাণী দেখতে পাই না। এমন কি কোনও মহিলা প্রেরিতও নেই।

যদি কেউ ভবিষ্যদ্বাণী করে কেবল তাঁর বিশ্বাসের অনুপাত অনুসারে এটি করা উচিত (রোমীয়-১২:৬)। এই কারণেই, পৌল ভবিষ্যদ্বাণী করার সময় "প্রভু এই কথাটি বলেন" শব্দটি ব্যবহার করতে ভয় পেতেন। তিনি বরং বলতেন, "আর আমার বোধ হয়, আমিও ঈশ্বরের আত্মাকে পাইয়াছি" (১ করিন্থীয়-৭:৪০)। যখন আমরা ভবিষ্যদ্বাণী করি, কখনই যেন আমরা "প্রভু এই কথাটি বলেন" শব্দটি ব্যবহার না করি; যদি না আমরা শাস্ত্রের কোনও পদকে উদ্ধৃত করে বলি। যিরমিয় এই জাতীয় শব্দ ব্যবহার করার বিষয়ে আমাদের সতর্ক করেছেন (যিরমিয় ২৩:৩১)। এছাড়াও, যখন আমরা ভবিষ্যদ্বাণী করি, আমাদের অবশ্যই অন্য বিশ্বাসীদের অনুমতি দিতে হবে আমাদের বার্তা প্রভুর কাছ থেকে এসেছে কিনা সেই প্রভেদ বুঝার এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের ব্যপারে।

আমাদের এও মনে রাখতে হবে যে কোনও নতুন-নিয়মের ভবিষ্যদ্বক্তারা অন্যদের কোনও নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে কী করা উচিত সে বিষয়ে দিকনির্দেশ দেন নি (পুরানো-নিয়মের ভবিষ্যদ্বক্তারা যেমন করেছিলেন)। প্রেরিত ১১:২৮ পদে আমরা দেখতে পাই যে আগাব একটি দুর্ভিক্ষের পূর্বাভাস দিয়েছিলেন যা আসন্ন, কিন্তু তিনি কখনই এটির সম্পর্কে কারও কি করা উচিত তা নিয়ে একটি শব্দও বলেন নি। একইভাবে, প্রেরিত ২১:১১ পদে, তিনি পৌলকে বলেছিলেন যে তিনি জেরুজালেমে গেল তাঁকে বন্দী করা হবে, কিন্তু তিনি পৌলকে যাবেন কি না সে বিষয়ে কিছু জানাননি। এর কারণ হ'ল প্রত্যেক বিশ্বাসীর কাছে এখন পবিত্র আত্মা রয়েছে - এবং আত্মা হলেন একজন তিনিই প্রতিটি বিশ্বাসীকে তাঁর করণীয় কার্যের বিষয়ে জানাবেন। পুরাতন নিয়মের অধীনে, লোকদের তাদের পথপ্রদর্শন করানোর জন্য সেই আত্মা ছিল না। আর যে ভাববাদীরা ছিলেন তাঁদের সেই কথা বলতে হয়েছিল প্রভু যা করতে চাইতেন।

কিন্তু এই সতর্কতা সত্ত্বেও, অনেক অপরিণত বিশ্বাসী আছে যারা পুরাতন নিয়মের ভাববাদীদের মতো কাজ করে এবং বিশ্বাসীদের আজও তাদের কি করা উচিত বলে দেয়। সোরে'তে কিছু অহংকারী, অপরিণত বিশ্বাসী ছিল, যারা এমনকি প্রেরিত পৌলের কাছে "তাদের নিজের আত্মা পরিপূর্ণ থেকে" "ভবিষ্যদ্বাণী" করেছিল এবং তাঁকে বলেছিল "যেন তিনি যিরূশালেমে না যান" (প্রেরিত ২১:৪)। কিন্তু পৌল বেশ সঠিকভাবে তাদের নির্দেশনা উপেক্ষা করে চলে গিয়েছিলেন (প্রেরিত ২১:১৩)। পরে, প্রভু তাঁকে নিশ্চিত করেছিলেন যে সত্যিকারেই তাঁর ইচ্ছা ছিল পৌল যেন যিরূশালেমে যান (প্রেরিত ২৩:১১)। সুতরাং সোরে'র সেই বিশ্বাসীদের তাদের তথাকথিত "ভবিষ্যদ্বাণী" সম্পূর্ণ ভুল ছিল। এটা প্রভুর কাছ থেকে আসে নি। আমাদের মণ্ডলীর বিশ্বাসীদেরকে অবশ্যই এমন কোনও "নির্দেশমূলক ভবিষ্যদ্বাণী" (তথাকথিত) শোনার ক্ষেত্রে সতর্ক করতে হবে যেখানে তাকে কী করতে হবে বা কী করা উচিত নয় তা বলা হয় - যাতে তারা প্রতারিত না হয়।

নতুন-নিয়মের ভবিষ্যদ্বাণীগুলির মূল উদ্দেশ্য হ'ল (১) ঈশ্বরের লোকদের তাদের পাপ থেকে বাঁচানো এবং (২) মণ্ডলী তৈরি করা। সেই জন্যে আমাদের মণ্ডলীর সকল সভায় আমাদের অবশ্যই এটি প্রচার করতে হবে - কারণ প্রভু যীশু এই দুটি উদ্দেশ্যেই এসেছিলেন: (১) তাঁর লোকদের সমস্ত পাপ থেকে রক্ষা করতে (নতুন নিয়মের প্রথম প্রতিশ্রুতি - মথি ১:২১); এবং (2) তাঁর মণ্ডলী তৈরি করতে (মথি ১৬: ১৮)।

অন্যদিকে, আপনি যদি পাপের হাত থেকে মুক্তি এবং খ্রীষ্টের দেহ মধ্যে সম্পর্ক গড়ে তোলার চেয়ে আত্মার উপহার অনুশীলন সম্পর্কে বেশি প্রচার করেন তবে আপনার মণ্ডলী খুব শীঘ্রই করিন্থেয় মণ্ডলীর মতো হয়ে উঠবে - আত্মার সমস্ত উপহারকে অনুশীলন করবে (১ করিন্থীয়-১:৭), কিন্তু একটি শারীরিক এবং অপরিপক্ক এবং মারামারি পূর্ণ মণ্ডলী। এবং আপনার মণ্ডলীও লায়দিকেয়াস্ত মণ্ডলীর মতো শেষ হতে পারে - ঘৃণাযোগ্য, দুর্দশাগ্রস্থ, দরিদ্র, অন্ধ এবং উলঙ্গ এবং এমনকি না জেনেই (প্রকাশিত বাক্য ৩:১৭)। এটি একটি বিপর্যয়ের মতো হবে।

আপনি যদি নতুন-নিয়মের মণ্ডলী তৈরি করতে চান, তাহলে যেমনটি প্রভুযীশু এবং প্রেরিতদের শিক্ষায় ছিল, তেমনি আপনার প্রচারও সর্বদা সেই একই রকম হওয়া উচিত - এবং বর্তমানে আমরা বেশিরভাগ খ্রীষ্টীয় মণ্ডলীর মধ্যে যা শুনি তা নয়।