একটি স্পষ্ট সুসমাচার বার্তা

Article Body: 

" নতুন জন্ম "- অথবা " পরিত্রাণ প্রাপ্ত " হওয়ার অর্থ কি সেই বিষয়ে আমি এই প্রবন্ধটিতে ব্যাখ্যা করতে চেয়েছি । এই অভিজ্ঞতার ক্ষেত্রে অনুতাপ হচ্ছে প্রথম পদক্ষেপ। কিন্তু অনুতাপ করার জন্য (পাপ থেকে ফিরে আসার জন্য) প্রথমে অবশ্যই জানতে হবে যে পাপ কি। বর্তমান খ্রীষ্টিয়ানদের মধ্যে অনুতাপ সম্পর্কে অনেক ভ্রান্ত উপলব্ধি আছে, কারণ পাপ সম্পর্কে অনেক ভ্রান্ত ধারণা আছে।

গত কয়েক দশক যাবৎ খ্রীষ্টিয়ান ধর্মের মান ব্যাপকভাবে অবনমন ঘটেছে। অধিকাংশ বর্তমান প্রচারকগন সত্যকে ভীষণভাবে লঘু করে "সুসমাচার" প্রচার করেছেন। লোকদের কেবলমাত্র যীশুতে বিশ্বাস করতে বলা হচ্ছে। কিন্তু কেবলমাত্র যীশুকে বিশ্বাস করার দ্বারাই কেউ পরিত্রাণ লাভ করতে পারে না, যদি না তারা অনুতাপ করে।

নতুন জন্ম লাভ করাই খ্রীষ্টীয় জীবনের ভিত্তি। আপনি যদি এই ভিত্তি ছাড়াই একটি উত্তম জীবন যাপন করেন, তবে আপনার খ্রীষ্টিয় জীবন জগতের অন্যান্য ধর্মের মত হবে - যে ধর্মগুলোতেও উত্তম জীবনযাপন করতে শিক্ষা দেওয়া হয়। আমাদের অবশ্যই উত্তমভাবে জীবনযাপন করতে হবে। কিন্তু সেটা খ্রীষ্ট ধর্মের প্রধান পরিকাঠামো - ভিত্তি নয়। ভিত্তি হল নতুন জন্ম লাভ করা। আমাদের অবশ্যই সেখান থেকে শুরু করতে হবে।

যীশু যোহন ৩৩ পদে "নতুন জন্মের" বিষয়টি প্রকাশ করেছেন, যখন তিনি ঈশ্বর ভীরু, সরলভাবে জীবনযাপনকারী এক ধর্মীয় নেতা, নীকদীমের সঙ্গে কথা বলছিলেন। যীশু তাঁকে বলছিলেন, "সত্য, সত্য, আমি তোমাকে বলিতেছি, নূতন জন্ম না হইলে কেহ ঈশ্বরের রাজ্য দেখিতে পায় না" (যোহন ৩৩)। সুতরাং আমরা দেখতে পাচ্ছি যে আপনি এক জন উত্তম ব্যাক্তি হলেও ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করতে হলে আপনাকে অবশ্যই আত্মিকভাবে জন্মগ্রহণ করতে হবে! তারপর যীশু তাকে বলেছিলেন যে তাঁকে (যীশুকে) মৃত্যুর জন্য ক্রুশে উঠতে হবে যাতে যতজন তাঁকে বিশ্বাস করবে তারা সকলে অনন্ত জীবন লাভ করতে পারেন (যোহন ৩১৪, ১৬)।

যীশু তাকে আরও বলেছিলেন যে লোকেরা জ্যোতি অপেক্ষা অন্ধকারকে প্রেম করেছিল, কারণ তাদের কর্মসকল মন্দ ছিল(যোহন ৩১৯)। কিন্তু যারা সৎ তারা জ্যোতির মধ্যে আসবে এবং পরিত্রাণ লাভ করবে(যোহন ৩২১)। নূতন জন্ম লাভ করতে হলে আপনাকে জ্যোতির মধ্যে আসতে হবে। যার অর্থ হল ঈশ্বরের কাছে সৎ থাকতে হবে এবং তাঁর কাছে আপনার সমস্ত পাপ স্বীকার করতে হবে। স্পষ্টতঃই, আপনি যত পাপ করেছেন তার সবগুলোই আপনার পক্ষে মনে করা সম্ভব হবে না। কিন্তু৷ আপনাকে অব্যশই স্বীকার করতে হবে যে আপনি এক জন পাপী এবং যতগুলো পাপ আপনার মনে থাকবে য়া আপনাকে ঈশ্বরের কাছে বলতে হবে।

পাপ অনেক বড় বিষয় এবং প্রথমে আপনি কেবলমাত্র এর একটি ক্ষুদ্র অংশ দেখতে পাবেন। এটা অনেকটা এরকম হবে যে আপনি যে বিস্তীর্ন দেশে বাস করছেন, আপনি তার কেবলমাত্র একটি অন্যন্ত ক্ষুদ্র অংশ দেখতে পাচ্ছেন। কিন্তু আপনি যখনই আপনার জানা পাপ গুলো থেকে ফিরে আসবেন, তখনই আপনি আপনার জীবনের "পাপের দেশের" আরও অধিক অংশ দেখতে পাবেন। আপনি যখন জ্যোতিতে চলবেন, তখন আপনি আপনার আরও অধিক পাপ দেখতে পাবেন - এবং তখন আপনি আরও অধিক পাপ থেকে শুচি হতে পারবেন। সুতরাং আপনাকে সর্বদা ঈশ্বরের সঙ্গে সততার সঙ্গে চলতে হবে। এই বিষয়ে অন্য আরেকটি উদাহরণ ব্যবহার করা যেতে পারে আপনি একটি বাড়ীতে বাস করছেন যেখানে অনেকগুলো নোংরা ঘর আছে। আপনি চান প্রভু যীশু আসুন এবং আপনার ঘরে বাস করুন। কিন্তু তিনি সেই নোংরা ঘরগুলোতে বাস করতে পারবেন না। সুতরাং তিনি একেক করে ঘরেগুলো পরিষ্কার করতে আপনাকে সাহায্য করবেন। অল্প অল্প করে সমগ্র বাড়ীটা পরিষ্কার হয়ে যাবে। এইভাবেই আমরা খ্রিষ্টিয় জীবনে পবিত্রতায় বৃদ্ধি লাভ করতে পারি।

সাধু পৌল একবার বলেছিলেন যে তিনি যেখানে গেছিলেন, তিনি প্রত্যেকের কাছেই একই বানী প্রচার করেছিলেন ঈশ্বরের প্রতি মন পরিবর্তন এবং প্রভু যীশু খ্রীষ্টের প্রতি বিশ্বাস (প্রেরিত ২০ ২০)। আপনার জীবনে উত্তম ভিত্তি স্থাপনের জন্য এবং নূতন জন্ম লাভের জন্য এই দুটি বিষয় অবশ্যই প্রয়োজনীয়। ঈশ্বর অনুতাপ এবং বিশ্বাস একত্রে যুক্ত করেছিলেন। কিন্তু অধিকাংশ প্রচারকগণ তাদের পৃথক করেছেন। বর্তমান সুসমাচার প্রচারকদের প্রচার থেকে অনুতাপের বিষয়টি পরিত্যাগ করা হয়েছে। অধিকাংশ প্রচারকগণ কেবলমাত্র বিশ্বাসের বিষয়েই প্রচার করেন।

কিন্তু আপনার মধ্যে কেবল বিশ্বাস থাকলেই আপনি নতুন জন্ম লাভ করতে পারবেন না। এটা অনেকটা এই উক্তিটির মত যে একজন মহিলা যতই চেষ্টা করুক না কেন তিনি কিছুতেই কেবলমাত্র নিজের প্রচেষ্টায় সন্তান লাভ করতে পারেন না। এক জন পুরুষও নিজের দ্বারা একটি শিশু লাভ করতে পারে না। একটি শিশুর জন্মের জন্য অবশ্যই এক জন পুরুষ এবং এক জন নারীকে একত্র হতে হবে। একইভাবে, যখন অনুতাপ এবং বিশ্বাস একত্র হয় তখনই একটি আত্মিক সন্তানের জন্ম হয়- এইভাবে আপনার আত্মাতে একটি নতুন জন্মের সৃষ্টি হয়। এই আত্মিক জন্মটি শারীরিক জন্মের মতই একটা বাস্তব ঘটনা - এবং এটা একটা মুহুর্তেই ঘটে যায়। এটা কোন ক্রমাগত ঘটনার বিষয় নয়।

নতুন জন্মের জন্য কয়েক মাসের প্রস্তুতি থাকতে পারে- ঠিক যেমন শারীরিক জন্মের জন্য কয়েক মাসের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হয়। কিন্তু নূতন জন্ম (শারীরিক জন্মের মতই) একটা মুহুর্তে ঘটে। কিন্তু শারীরিক জন্মের মতই এর কোন নির্দিষ্ট তারিখ আগে থেকে জানা যায় না। একজন যখন জীবিত থাকেন - তখন সেটা খুব একটা গাম্ভীর্যপূর্ণ বিষয় নয়!! কিন্তু আপনি আজ খ্রীষ্টে জীবিত আছেন কি না সে বিষয়ে নিশ্চিতভাবে জানাই একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

আমরা যখন বলি যে যীশুই ঈশ্বরের কাছে যাওয়ায় একমাত্র পথ তখন আমরা কি খুব সংকীর্ণ-মনা হয়ে যাই?

একটি উদাহরণের মাধ্যমে আমি এই প্রশ্নটির উত্তর দিতে চাই কোন এক জন ব্যক্তি যিনি আমার পিতাকে দেখেননি (অথবা তার ছবিও দেখেননি) তিনি জানেন না আমার পিতা কিরকম দেখতে ছিলেন। একইভাবে আমরা যারা কখনও ঈশ্বরকে দেখিনি তাদের পক্ষে ঈশ্বর সম্পর্কে জানা অথবা তাঁর পথ সম্পর্কে জানা সম্ভব নয়। কিন্তু যীশু খ্রীষ্ট ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছিলেন।সুতরাং তিনিই কেবলমাত্র আমাদের ঈশ্বরের কাছে যাওয়ায় পথ দেখাতে পারেন।তিনি বলেছিলেন, "আমিই পথ ও সত্য ও জীবন; আমা দিয়া না আসিলে কেহ পিতার নিকটে আইসে না" (যোহন ১ ৪ ৬)।

আমরা যখন পিতা ঈশ্বরের কাছে যাবার জন্য একমাত্র পথ হিসেবে যীশুর দাবীটির কথা চিন্তা করি, তখন আমাদের হয় এটা বলতে হবে যে তিনি যা বলেছেন সত্য বলেছেন, নতুবা আমাদের বলতে হবে যে তিনি একজন মিথ্যাবাদী অথবা প্রতারক।তাঁকে মিথ্যাবাদী এবং প্রতারক বলার সাহস কার আছে? যীশু একজন ভাল মানুষ অথবা একজন ভাববাদী ছিলেন এটা বলাই যথেষ্ট নয়। না, তিনি স্বয়ং ঈশ্বর - তিনি কেবলমাত্র একজন ভাল মানুষ নন।তিনি যদি একজন মিথ্যাবাদী অথবা একজন প্রতারক হতেন তবে তিনি একজন ভাল মানুষ হতে পারতেন না! সুতরাং আমরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারি যে যীশু বাস্তবিকই এক মানবরুপী ঈশ্বর ছিলেন।

সমস্ত সত্যই সংকীর্ণ মনষ্ক। গণিতের ক্ষেত্রে ২+২ সর্বদাই ৪ হয়। আমরা কখনই মুক্ত মনষ্ক হয়ে সম্ভাব্য উত্তর হিসাবে ৩ অথবা ৫ কে গ্রহণ করতে পারি না। এমনকি আমরা ৩.৯৯৯৯ সংখ্যাটিকেও গ্রহণ করতে পারি না। আমরা যদি সত্যের এই ভিন্নতা গ্রহণ করি, আমাদের গাণিতিক হিসাব ভুল হয়ে যাবে। একইভাবে আমরা জানি যে পৃথিবী সূর্যের চারদিকে আবর্তিত হচ্ছে। আমরা যদি উদারমনষ্ক হওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি এবং অন্য কোন তত্ত্ব গ্রহণ করি যেখানে বলা হয়েছে সূর্যও পৃথিবীকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়, আমাদের জ্যোতির্বিজ্ঞানের গণনাগুলোও ভুল হয়ে যাবে। একইভাবে রসায়নশাস্ত্র অনুসারে H20 হল জল। আমরা উদারমনষ্ক হয়ে বলতে পারি না যে H20 লবণও হবে!! সুতরাং আমরা দেখতে পাচ্ছি যে সত্য সব দিক থেকেই চূড়ান্ত এবং সংকীর্ণ। ঈশ্বরের বিষয়েও এটা একই রকম সত্য। উদারমনষ্কতা গণিত, জ্যোতির্বিজ্ঞান এবং রসায়নের ক্ষেত্রে এবং ঈশ্বর সম্পর্কে সত্য জানার ক্ষেত্রেও মারাত্মক ত্রুটি আনতে পারে।

বাইবেলে শিক্ষা দেওয়া হয়েছে যে সমস্ত মানুষই পাপী- এবং যীশু পাপীদের জন্যেই মৃত্যুবরণ করেছিলেন। সুতরাং, আপনি যদি একজন "খ্রীষ্টিয়ান" রূপে যীশুর কাছে আসেন, তিনি আপনার সমস্ত পাপ ক্ষমা করবেন না, কারণ তিনি খ্রীষ্টিয়ান্দের জন্য মৃত্যুবরণ করেননি! তিনি পাপীদের জন্য মৃত্যুবরণ করেছিলেন।কেবলমাত্র সেই ব্যক্তি পাপের ক্ষমা লাভ করতে পারবেন যিনি যীশুর কাছে আসবেন এবং বলবেন, "প্রভু, আমি একজন পাপী।" আপনি কোন ধর্মের এক জন সদস্যরুপে যীশুর কাছে এসে ক্ষমা

লাভ করতে পারবেন না, কারন তিনি পাপীদের জন্য মৃত্যুবরণ করেছিলেন। আপনি যদি এক জন পাপীরুপে তাঁর কাছে আসেন তাহলে তৎক্ষণাৎ আপনার পাপের ক্ষমা হতে পারে। আমাদের সকলের পক্ষে এটা জানা সহজ যে আমরা সকলেই পাপী - কারণ ঈশ্বর আমাদের সবাইকেই বিবেক দিয়েছেন।

শিশুদেরও ভীষণ সংবেদনশীল বিবেক আছে, যা তাদের ভুল সম্পর্কে দ্রুত সচেতন করে। কিন্তু বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তাদের এই বিবেককঠিন এবং অসংবেদনশীল হয়ে যেতে পারে। এক জন তিন বছরের শিশু যখন মিথ্যা কথা বলে তখন তাঁর মুখ দেখেই বুঝতে পারা যায় যে সে দোষী কারণ তার বিবেক তাকে দোষী সাব্যস্ত করে। কিন্তু পনের বছর বয়সে সে সরাসরি মিথ্যা কথা বলতে পারে, কারণ সে বার বার তার কণ্ঠস্বরকে অস্বীকার করার দ্বারা তার বিবেককে হত্যা করেছে। একটা ছোট শিশুর পায়ের তলা এত নরম থাকে যে সে একটা পালকের আঘাতও বুঝতে পারে। কিন্তু প্রাপ্ত বয়স্ক লোকদের পায়ের তলা এত কঠিন হয়ে যায় যে তাদের পায়ে কোন পিন ফুটলে যতক্ষণ না তা একটা কঠিন কিছুর সঙ্গে চাপ লাগছে ততক্ষন তারা কিছু অনুভব করতে পারে না। বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের বিবেকের ক্ষেত্রেও সেই একই ঘটনা ঘটে। সুতরাং বিবেক হচ্ছে এমন একটি কন্ঠস্বর যা ঈশ্বর আমাদের মধ্যে স্থাপন করেছেন, যা আমাদের বলে যে আমরা হলাম নৈতিক সত্তাবিশিষ্ট। ইহা আমাদের ন্যায় এবং অন্যায় সম্পর্কে প্রাথমিক উপলব্ধি দান করে। সুতরাং এটা ঈশ্বরের একটি আশ্চর্য্য উপহার। যীশু এই বিষয়টিকে "হৃদয়ের চক্ষু" নামে অভিহিত করেছিলেন(লূক ১১৩৪)। আমরা যদি যত্নের সঙ্গে এই চোখকে সংরক্ষণ না করি, একদিন আমরা আত্মিকভাবে অন্ধ হয়ে যাব। বিবেকের বিদ্বাতাকে এড়িয়ে যাওয়ার বিষয়টি চোখের মধ্যে প্রবেশ করা কোন ধূলোর কণাকেএড়িয়ে যাওয়ার মতই বিপজ্জনক - একদিন আপনি আত্মিকভাবে সম্পূর্ন অন্ধ হয়ে যাবেন। শিশুরা যখন জন্মায় তখন তাদের কারও কোন ধর্ম থাকে না। তারা সকলে একই থাকে। দুই বছর পরেও তারা একই রকম থাকে - স্বার্থপর এবং ঝগড়াটে। কিন্তু এরপর যতই সময় অতিক্রান্ত হয়, তাদের পিতামাতারা তাদের বিভিন্ন ধর্মীয় মতবাদ শিক্ষা দেন এবং এইভাবেই তাদের বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে প্রবেশ ঘটে। শতকরা ৯০ ভাগ ক্ষেত্রেই এক জনব্যক্তির ধর্ম তার পিতামাতা তার জন্য নির্ধারণ করে দেন। কিন্তু ঈশ্বর আমাদের বিভিন্ন ধর্মের লোক হিসাবে দেখেন না। তিনি আমাদের সকলকে পাপীরুপে দেখেন। যীশু সমস্ত মানবজাতীর নিমিত্ত মৃত্যুবরণ করার জন্যে এই পৃথিবীতে এসেছিলেন। যারা নিজেদের ঈশ্বরের উপস্থিতির মধ্যে প্রবেশ করার জন্যে যথেষ্ট ভাল মনে করেন তাদের জন্য তিনি আসেননি, কিন্তু যারা স্বীকার করেন যে তারা পাপী এবং ঈশ্বরের উপস্থিতিতে প্রবেশ করার জন্য অনুপযুক্ত তাদের জন্য তিনি এসেছিলেন। আপনার বিবেক আপনাকে বলে দেয় যে আপনি পাপী। সুতরাং যীশুর কাছে আসা এবং তাঁকে এটা বলা আপনার কাছে কেন এত কঠিন হবে, "প্রভু, আমি একজন পাপী, আমি আমার জীবনে অনেক অন্যায় কাজ করেছি?" কিছু সংখ্যক লোক একটি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে পারেন, "মঙ্গলময় ঈশ্বর কি আমাদের সমস্ত পাপ আগ্রাহ্য করে আমাদের ক্ষমা করতে পারেন না, ঠিক যেমন আমাদের জগতের পিতা আমাদের ক্ষমা করেন?" একজন পুত্র যদি কোন একটি মূল্যবান বস্তু ভেঙ্গে ফেলে (অথবা হারিয়ে ফেলে) এবং তার জন্য দুঃখিত হয় এবং তার পিতার কাছে ক্ষমা চায়, তার পিতা তাকে ক্ষমা করেন। কিন্তু এটা কোন নৈতিক বিষয় নয়। আমাদের সমস্ত পাপ যদি এরকম হত তবে ঈশ্বর নিশ্চিতভাবে তৎক্ষনাৎ আমাদের ক্ষমা করতেন। কিন্তু পাপ ঐ ধরণের কোন বিষয় নয়। পাপ হল অপরাধ। একজন ব্যক্তি যদি আদালতের বিচারক হন এবং তাঁর পুত্র যদি তাঁর সম্মুখে কোন অপরাধে অভিযুক্ত হয়ে দণ্ডায়মান হয় তবে তিনি কি তাকে বলতে পারবেন, "পুত্র, আমি তোমাকে ভালবাসি, আমি তোমাকে ক্ষমা করছি। আমি তোমাকে শাস্তি দেব না?" ন্যায় বিচার সম্পর্কে সামান্যতম জ্ঞান আছে এমন কোন জাগতিক বিচারক কখনও এই ধরণের কাজ করবেন না। ন্যায় বিচার সম্পর্কে এই জ্ঞান যা আমাদের প্রত্যেকেরই আছে তা হল আমাদের সিদ্ধ বিচারক ঈশ্বরের একটি ক্ষুদ্র অংশ, যাঁর সাদৃশ্যে আমরা নির্মিত হয়েছি। সুতরাং আমরা যখন কোন অপরাধ করি, একজন বিচারক হিসাবে ঈশ্বর আমাদের বলেন, " আমি তোমাকে খুব প্রেম করি কিন্তু তুমি একটা অপরাধ করেছ - সুতরাং তোমাকে শাস্তি দিতেই হবে।" এই আদালতে, পুত্র তার অপরাধের জন্য ভীষণভাবে দুঃখিত হতেও পারে, কিন্তু এক বিচারক হিসাবে তার পিতাকে তাকে শাস্তি দিতেই হবে। ধরা যাক একটি বালক কোন একটি ব্যাংকে ডাকাতি করেছে। পিতা তার বিরুদ্ধে আইন অনুসারে সম্পূর্ন জরিমানা দানের দণ্ড ঘোষণা করেছেন - ধরা যাক সেই জরিমানার পরিমাণ দশ লক্ষ টাকা। যেহেতু সেই বালকটির কাছে জরিমানা পরিশোধ করার টাকা নেই, তাকে কারাগারে যেতেই হবে! তখন পিতা তাঁর বিচারাসন থেকে নেমে আসবেন, তাঁর বিচারকের বস্ত্র খুলে ফেলবেন এবং নিচে নেমে আসবেন। তিনি তাঁর ব্যক্তিগত চেক্-বইটা বের করবেন এবং দশ লক্ষ টাকার চেক্ লিখবেন (যা তাঁর সারা জীবনের সঞ্চয়) এবং জরিমানা পরিশোধ করার জন্য তিনি সেই চেকটা তার পুত্রের হাতে দেবেন। এখন কি সেই বালকটি তাকে না ভালোবাসার জন্য তার পিতাকে অভিযুক্ত করতে পারবে? না! এই সময়ে অন্যরাও তাঁকে এক ন্যায়পরায়ণ বিচারক না হওয়ার বিষয়ে অভিযুক্ত করতে পারবেনা, কারণ তিনি তার পুত্রকে আইনের দাবী হিসাবে পূর্ণ শাস্তি দিয়েছিলেন। ঈশ্বর ঠিক এই কাজটিই আমাদের জন্য করেছিলেন। বিচারক হিসাবে তিনি ঘোষণা করেছিলেন যে আমাদের সমস্ত পাপের জন্য আমাদের অবশ্যই মৃত্যুবরণ করতে হবে। তারপর তিনি মনুষ্যরূপে এই পৃথিবীতে নেমে এসেছিলেন এবং তিনি নিজে আমাদের শাস্তি গ্রহণ করেছিলেন।

বাইবেল আমাদের শিক্ষা দেয় যে ঈশ্বর এক হলেও তিনি তিনটি ব্যক্তিতে বিদ্যমান - পিতা, পুত্র এবং পবিত্র আত্মা। ঈশ্বর যদি এক ব্যক্তি হতেন তিনি সম্ভবতঃ স্বর্গে তার সিংহাসন খালি রেখে মানবরুপে যীশু নাম নিয়ে এই পৃথিবীতে আসতে পারতেন না। তাহলে এই বিশ্ব কে চালাতেন? কিন্তু যেহেতু ঈশ্বর ত্রিত্ব ব্যক্তিত্বে বিরাজমান, সেহেতু পুত্র এই পৃথিবীতে নেমে আসতে পেরেছিলেন। কিছুসংখ্যক খ্রীষ্টিয়ান "কেবলমাত্র যীশুর" নামে লোকদের বাপ্তিষ্ম দান করেন, তারা বলেন যে ঈশ্বরে কেবলমাত্র এক ব্যক্তি আছেন- যীশু। এটা একটা মারাত্মক ত্রুটি। ১ যোহন ২ ২২ পদে বলা হয়েছে যে যেকোন ব্যক্তি পিতা এবং পুত্রকে অস্বীকার করে তার মধ্যে খ্রীষ্টারির আত্মা আছে।কারণ তখন সে এটাই অস্বীকার করে যে পুত্র ঈশ্বর মানুষ্যরুপে যীশু খ্রীষ্ট নামে এসেছিলেন এবং তাঁর নিজের ইচ্ছাকে অস্বীকার করেছিলেন এবং পিতার ইচ্ছা পালন করেছিলেন এবং তারপর পিতা ঈশ্বরের সম্মুখে আমাদের সমস্ত শাস্তি তিনি গ্রহণ করেছিলেন (১ যোহন ৪ ২,৩)।

যীশু যখন এই পৃথিবীতে এসেছিলেন তখন তিনি পূর্ণ ঈশ্বর এবং পূর্ণ মানুষ ছিলেন। তিনি যখন ক্রুশে মৃত্যুবরণ করেছিলেন তখন তিনি সমস্ত মানবজাতির সমস্ত পাপের শাস্তি গ্রহণ করেছিলেন। আমাদের পাপের এই শাস্তির জন্য আমাদের চিরকাল ঈশ্বরের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হতে হত। যীশু যখন ক্রুশে ঝুলেছিলেন তখন তিনি স্বর্গে তাঁর পিতার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছিলেন। এই বিচ্ছিন্নতা এত ভয়ঙ্কর দুঃখভোগের বিষয় ছিল যা কোন মানুষ কখনও ভোগ করেনি।

বিশ্বে নরক হচ্ছে একমাত্র ঈশ্বর-পরিত্যক্ত স্থান। যেখানে ঈশ্বর থাকেন না। সেই কারণে নরকেই দিয়াবল তার সমস্ত মন্দকাজ পূর্ণরূপে প্রকাশ করে। এই মন্দতাই যারা নরকে যায় তাদের জন্য সমস্ত কিছু এত দুর্দশাপূর্ণ করে তোলে। যীশুকে যখন ক্রুশে ঝুলানো হয়েছিল তখন তিনি শাস্তির এই অভিজ্ঞতা লাভ করেছিলেন। তিনি ছয় ঘন্টা ক্রুশের ওপর ছিলেন। কিন্তু এই ছয় ঘন্টার মধ্যে শেষ তিন ঘন্টা তিনি ঈশ্বর কর্তৃক পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিলেন। সূর্য অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়েছিল এবং পৃথিবী কম্পিত হয়েছিল। পিতা খ্রীষ্টের মস্তক (১ করি ১১ ৩) - এবং খ্রীষ্ট যখন পরিত্যক্ত হয়েছিলেন, তখন এটা তার কাছে মস্তক ছিন্ন করার মত বিষয় ছিল। তখন তাঁর সেই মৃত্যু যন্ত্রণার বিষয়টি আমরা সম্পূর্ণ উপলব্ধি করতে পারব না।

যীশু যদি একজন সৃষ্ট সত্তা হতেন, তবে তিনি সম্ভবতঃ আদমের সময় থেকে বসবাসকারী কোটি কোটি মানুষের শাস্তি গ্রহণ করতেন না! কারণ কোটি কোটি মানুষের হত্যাকারীর পরিবর্তে একজন মানুষকে ক্রুশে ঝুলান যেতে পারে না! কিন্তু যীশু এই শাস্তি গ্রহণ করতে পেরেছিলেন কারণ তিনি হলেন অসীম ঈশ্বর।

এছাড়াও তিনি যেহেতু অসীম ঈশ্বর ছিলেন, সেহেতু তিনি তিন ঘন্টার মধ্যে অনন্তকালীন শাস্তি গ্রহণ করতে পেরেছিলেন। যীশু খ্রীষ্ট যদি ঈশ্বর হতেন এবং পিতা ঈশ্বর যদি আমাদের পাপের জন্য তাকে শাস্তি দিতেন, তবে সেটা একটা মহা অন্যায় কাজ হত। ঈশ্বর একজন ব্যক্তিকে অন্য কারও অপরাধের জন্য শাস্তি দিতে পারেন না, এমন কি সেই ব্যক্তি শাস্তি গ্রহণ করতে ইচ্ছুক থাকলেও পারেন না। আপনার বন্ধু আপনার শাস্তি গ্রহণ করতে পারেন না এবং আপনার পরিবর্তে ফাঁসিতে ঝুলতে পারেন না। সেটা অন্যায় হবে। সুতরাং যীশু একজন সাধারণ সৃষ্ট সত্তা হতেন এবং তিনি আমাদের পাপের জন্য শাস্তি ভোগ করতেন, তবে সেটা সব থেকে বড় অন্যায় হত।

সুতরাং এটা স্পষ্ট যে কোন সৃষ্ট সত্তার পক্ষে আমাদের সমস্ত পাপের শাস্তি গ্রহণ করা সম্ভব নয়।কেবলমাত্র ঈশ্বর সেই শাস্তি গ্রহণ করতে পারেন, কারণ তিনি সারা বিশ্বের বিচারক। আমাদের শাস্তিদানের তাঁর অধিকার আছে - এবং আমাদের শাস্তি গ্রহণ করারও তাঁর অধিকার আছে।তিনি যখন যীশু খ্রীষ্টে ব্যক্তি রুপে এই পৃথিবীতে এসেছিলেন তখন তিনি এটাই করেছিলেন। দুটি মহান সত্যের ওপর খ্রীষ্টিয় জীবনের বিশ্বাসের ভিত্তি স্থাপিত আছে প্রথমতঃ খ্রীষ্ট মানবজাতীর সমুদয় পাপের নিমিত্ত মৃত্যুবরণ করেছিলেন। দ্বিতীয়তঃ তিন দিন পর তিনি মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হয়েছিলেন।

খ্রীষ্ট যদি মৃত্যু থেকে উত্থিত না হতেন তবে তাঁর ঈশ্বরত্বের কোন প্রমাণ থাকত না। তাঁর মৃত্যু থেকে উত্থিত হওয়ার ঘটনাটি তিনি যা কিছু বলেছিলেন তা যে সত্য সেই বিষয়ের প্রমাণ স্বরুপ ছিল। কোন ধর্মীয় নেতা কখনও দাবী করেননি যে তিনি মানবজাতীর পাপের জন্য মৃত্যুবরণ করবেন। এবং কোন ধর্মীয় নেতা কখনও মৃত্যু থেকে উত্থিত হননি।এই দুই সত্য ঘটনাই যীশু খ্রীষ্টকে অনুপম ব্যক্তিত্বে পরিণত করেছে।

সমস্ত ধর্ম আমাদের অন্যদের মঙ্গল করতে এবং শান্তিতে বাস করতে শিক্ষা দেয়। কিন্তু খ্রীষ্টিয় বিশ্বাসের এক অনুপম ভিত্তি আছে খ্রীষ্ট আমাদের পাপের জন্য মৃত্যুবরণ করেছিলেন এবং পুণরুত্থিত হয়েছিলেন। যদি এই দুটি সত্যকে খ্রীষ্ট ধর্ম থেকে মুছে ফেলা হয়, তবে খ্রীষ্টিয়ান ধর্ম অন্য সমস্ত ধর্মের সমান হয়ে যাবে। এই সত্য দুটিই খ্রীষ্ট ধর্মকে উৎকর্ষতা দান করেছে।

আমরা সকলে ঈশ্বরের নিমিত্ত জীবনযাপন ইওরার জন্য তাঁর দ্বারা সৃষ্ট হয়েছি। কিন্তু আমরা সকলে নিজেদের জন্যে জীবনযাপন করছি। সুতরাং, আমরা যখন ঈশ্বরের কাছে আসব তখন আমাদের একজন চোরের মত অনুতপ্ত অবস্থায় তাঁর কাছে আসতে হবে, কারণ বহু বছর যাবৎ তাঁর যা কিছু প্রাপ্য ছিল আমরা তা চুরি করেছিলাম। খ্রীষ্ট যে আমাদের জন্য মৃত্যুবরণ করেছিলেন সেই কারণে আমাদের কৃতজ্ঞচিত্তে তাঁর কাছে আসতে হবে এবং আমাদের বিশ্বাস করতে হবে যে তিনি মৃত্যু থেকে উত্থিত হয়েছেন এবং এখন তিনি জীবিত আছেন।তিনি যদি আজ জীবিত না থাকতেন তবে আমরা সম্ভবতঃ তাঁর কাছে প্রার্থনা করতে পারতাম না- কারণ আপনি একজন মৃত ব্যক্তির কাছে প্রার্থনা করতে পারেন না।কিন্তু যীশু যেহেতু মৃত্যু থেকে উত্থিত হয়েছিলেন, সেহেতু আমরা তাঁর সঙ্গে কথোপকথন করতে পারি।

খ্রীষ্ট মৃত্যু থেকে উত্থিত হবার পর, তিনি ঊর্ধ্বে আরোহণ করেছিলেন এবং স্বর্গে ফিরে গিয়েছিলেন। তারপর ঈশ্বরের তৃতীয় ব্যক্তি পবিত্র আত্মা পৃথিবীতে অবতরণ করেছিলেন। পবিত্র আত্মা যীশুর মত এক বাস্তব ব্যক্তি। তিনি তাঁর উপস্থিতিতে আমাদের জীবন পূর্ণ করার জন্য এই পৃথিবীতে এসেছেন।আমরা যদি পবিত্র আত্মার কাছে নিজেদের সমর্পণ করি, তিনি আমাদের পবিত্র করতে পারেন।পবিত্র আত্মা যখন আপনাকে পূর্ণ করবে, তখন আপনি পাপের ওপর একটি বিজয়ী জীবন যাপন করতে সক্ষম হবেন। পঞ্চাশত্তমীর দিনে মানুষের মধ্যে পবিত্র আত্মার বাস করার পূর্বে কোন ব্যক্তি সেইভাবে জীবন যাপন করতে পারেনি। এর পূর্বে, মানুষ কেবলমাত্র তাঁর বাহ্যিক জীবনের উন্নতিসাধন করতে পারত। তাদের আভ্যন্তরীণ মনুষ্য পাপের দ্বারা পরাজিত এবং অপরিবর্তিত থাকত। যখন পবিত্র আত্মা আপনাকে পূর্ণ করেন, তখন স্বয়ং ঈশ্বর আপনার মধ্যে বাস করেন এবং তিনি আপনাকে আভ্যন্তরীণভাবে ঐশ্বরিকভাবে জীবন যাপন করতে সক্ষম করে।

সুসমাচারের আশ্চর্য্য বার্তাটি হল ঈশ্বর যখন আপনাকে ক্ষমা করেন, তখন আপনার হৃদয় সম্পূর্ণরূপে শুচি হয়, তখন খ্রীষ্ট তাঁর পবিত্র আত্মার মাধ্যমে আপনার মধ্যে বাস করতে পারেন এবং আপনার দেহকে তিনি ঈশ্বরের গৃহে পরিণত করেন।

আমি একবার এক খ্রীষ্টিয়ানের সঙ্গে কথা বলেছিলাম যিনি ধূমপান করতেন। আমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম যে তিনি কি কখনও চার্চ- গৃহের মধ্যে ধূমপান করেছিলেন? তিনি বলেছিলেন যে তিনি কখনও চার্চের মধ্যে ধূমপান করেননি, কারণ চার্চ হলো ঈশ্বরের গৃহ। আমি তাকে বলেছিলাম যে তার দেহই ঈশ্বরের মন্দির এবং চার্চ- বিল্ডিং তার গৃহ নয়। আপনি কখনও চার্চের মধ্যে ব্যভিচার করতে পারেন না, পারেন কি? আপনি চার্চের মধ্যে ইন্টারনেট পর্ণগ্রাফিও দেখতে পারেন না। আপনার দেহ ঈশ্বরের গৃহ, যখন খ্রীষ্ট আপনার মধ্যে বাস করেন। সুতরাং, আপনি যখন আপনার অঙ্গ প্রত্যঙ্গ নিয়ে কাজ করবেন, তখন যত্নশীল হবেন। ধূমপান, মদ্যপান, মাদকদ্রব্য সেবন এবং মনের মধ্যে অশুদ্ধ চিন্তা প্রবেশ করতে দিলে তা আপনার দেহ এবং মনকে ধীরে ধীরে ধ্বংস করে দেবে।

খ্রীষ্টিয় জীবন একটি দৌড় প্রতিযোগিতার মত। আমরা যখন পাপ থেকে ফিরে আসি এবং নতুন জন্ম গ্রহণ করি তখন আমরা সেই দৌড় প্রতিযোগিতার প্রারম্ভিক রেখার কাছে আসি। তারপর আমরা দীর্ঘ ম্যারাথন প্রতিযোগিতা শুরু করি - আমাদের জীবনের শেষ পর্যন্ত আমরা দৌড়াতে থাকি।আমরা অনবরতঃ কেবল দৌড়াই, দৌড়াই, আর দৌড়াই। এইভাবে প্রতিদিন আমরা সমাপ্তি রেখার দিকে আরও কাছে এগিয়ে আসি। কিন্তু আমরা যেন কখনই দৌড়ান থামিয়ে না দিই।

অথবা আমরা আরেকটা উদাহরণ ব্যবহার করতে পারি আমরা যখন নতুন জন্ম লাভ করি তখন আমরা আমাদের ঘরের জন্য ভিত্তি স্থাপন করি। তারপর আমরা ধীরে ধীরে বাড়িটার মুল পরিকাঠামো নির্মাণ করি - এবং এর মধ্যে অসংখ্য তলা অন্তর্ভুক্ত হয়। আপনার জীবনের মধ্যে এটাই হচ্ছে সর্বোৎকৃষ্ট জীবন যা আপনি যাপন করেছেন, কারণ আপনি ধীরে ধীরে আপনার জীবনের সমস্ত মন্দ বিষ্যগুলোকে বাদ দিয়েছেন এবং যত বছর অতিবাহিত হবে আপনি আরও অধিক ঈশ্বরের স্বরুপতা লাভ করবেন।

সুতরাং নতুন জন্ম লাভ করতে হলে আপনাকে অবশ্যই কি করতে হবে?

সর্ব প্রথম আপনাকে নিজেকে একজন পাপী বলে স্বীকার করতে হিবে। কখনও নিজেকে কারও সঙ্গে তুলনা করবেন না এবং আপনি তাদের থেকে ভাল বলে কল্পনা করে সান্ত্বনা লাভ করবেন না। পাপ হচ্ছে একটি মৃত্যুজনক বিষের মত। আপনি আক ফোঁটা অথবা হাজার ফোঁটা বিষ পান করুন না কেন, আপনি অবশ্যই মরবেন সুতরাং, আপনি যদি উত্তম্রুপে আপনার খ্রীষ্টিয় জীবন শুরু করতে চান, তবে স্বীকার করুন যে আপনি পৃথিবীর সব থেকে খারাপ পাপীর থেকে কোন অংশে ভাল নন। তারপর আপনি আপনার সমস্ত জ্ঞাত পাপ থেকে ফিরে আসুন।

তারপর খ্রীষ্টকে বিশ্বাস করুন। এর অর্থ হল নিজেকে খ্রীষ্টের কাছে সমর্পণ করা - কেবলমাত্র তাঁর বিষয়ে কিছু বিষয়ে বিশ্বাস করা নয়। নিজেকে তাঁর কাছে সমর্পণ না করেও কাউকে বিশ্বাস করা যায়। বিবাহের কন্যাকে তার বিবাহের সময় জিজ্ঞাসা করা হয়, "আপনি কি এই পুরুষটির কাছে নিজেকে সমর্পণ করতে ইচ্ছুক?" সম্ভবতঃ এর উত্তরে তিনি বলবেন, "আমি বিশ্বাস করি তিনি খুবই ভাল মানুষ। কিন্তু আমি এ বিষয়ে নিশ্চিত নই যে আমি তাঁর কাছে আমার সমগ্র জীবন এবং ভবিষ্যৎ সমর্পণ করতে পারব কি না।" তাহলে সেই কন্যা তাকে বিবাহ করতে পারবে না। কারণ তার প্রতি সেই কন্যার বিশ্বাস নেই। একজন মহিলা যখন বিবাহ করেন, তখন তার সমগ্র জীবনের দিকপরিবর্তিত হয়ে যায়। তিনি তার পদবী পরিবর্তন করে স্বামীর পদবী গ্রহন করেন। তিনি তাঁর পিতার গৃহ ত্যাগ করে স্বামীর গৃহে বাস করতে যান। তিনি হয়তো জানেন না কোথায় তাকে বাস করতে হবে, কিন্তু তিনি তার সমগ্র ভবিষ্যত জীবনে তার স্বামীর ওপর নির্ভর করেন। তার স্বামীকে তিনি বিশ্বাস করেন। খ্রীষ্টে বিশ্বাস করার এটাই হল একটি চিত্র।

"খ্রীষ্টিয়ান" শব্দটির অর্থ হল "মিসেস খ্রীষ্ট" (সম্ভ্রম সহকারে এটা বলা যায়)! কেবলমাত্র আমাকে বিবাহ করার পরেই আমার স্ত্রী আমার নাম গ্রহন করতে পারেন। একইভাবে, আপনি যদি খ্রীষ্টকে বিবাহ করেন, তবেই কেবলমাত্র আপনি খ্রীষ্টের নাম গ্রহন করতে পারেন এবং নিজেকে খ্রীষ্টিয়ান বলে অভিহিত কিরতে পারেন। আমাকে বিবাহ না করেই যদি কোন মহিলা নিজেকে "মিসেস জ্যাক্ পুনেন" নামে অভিহিত করেন, তবে তিনি মিথ্যা কথা বলবেন। একইভাবে, যদি কেউ খ্রীষ্টকে বিবাহ না করে নিজেকে খ্রীষ্টিয়ান বলে অভিহিত কিরেন তবে তিনিও মিথ্যা কথা বলছেন।

বিবাহ হল চিরকালের জন্য, এটা কিছু দিনের বিষয় নয়। একইভাবে, খ্রীষ্টিয়ান হওয়ার বিষয়টি একটি আজীবনের প্রতিশ্রুতিবদ্ধতা। খ্রীষ্টের প্রতি পূর্ন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকার অর্থ এই নয় যে আপনি সিদ্ধ হয়েছেন। একজন মহিলা যখন বিবাহ করেন, তখন তিনি এটা প্রতিজ্ঞা করেন না তিনি জীবনে কখনও ভুল করবেন না। তিনি অসংখ্য ভুল করবেন, কিন্তু তার স্বামী তাকে ক্ষমা করবেন। কিন্তু তিনি প্রতিজ্ঞা করেন যে তিনি চিরকাল তাঁর স্বামীর সঙ্গে বাস করবেন। এটাই খ্রীষ্টের সঙ্গে আমাদের ঐক্যবদ্ধতার চিত্র।

এর পরবর্তী যে পদক্ষেপটি আপনাকে অবশ্যই গ্রহন করতে হবে তা হল জলে বাপ্তিস্ম গ্রহন করার বিষয়টি হল বিবাহের সার্টিফিকেট বা প্রমাণ পত্র গ্রহন করা। আপনি কেবলমাত্র বিবাহের প্রমান পত্র লাভ করেই বিবাহ করতে পারেন না। বাপ্তিস্ম গ্রহন করেও আপনি খ্রীষ্টিয়ান হতে পারেন না। কেবলমাত্র বিবাহ করার পরেই আপনি বিবাহের প্রমাণ পত্র লাভ করতে পারেন, একই ভাবে, কেবলমাত্র খ্রীষ্টের কাছে নিজেকে দান করার পরেই আপনি বাপ্তিস্ম গ্রহণ করতে পারেন। বাপ্তিস্মের সময় আপনি সাক্ষ্য দেন যে আপনি আপনার পুরাতন জীবনসহ শেষ হয়েগেছেন এবং যীশু খ্রীষ্টকে আপনার জীবনের প্রভুরুপে গ্রহণ করেছেন।

ত্তৈম স্বামী এবং স্ত্রী পরস্পর অনেক কথা বলেন। সুতরাং আপনাকেও যীশুর সঙ্গে কথা বলতে হবে এবং প্রতিদিন আপনি যখন বাইবেল পাঠ কর বেন তখন বাইবেলের মাধ্যমে তিনি যখন আপনার সঙ্গে কথা বলবেন, তখন আপনাকে মনোযোগ দিয়ে তাঁর কথা শ্রবণ করতে হবে।

এক উত্তম স্ত্রী কখনও এমন কোন কাজ করেন না যা তাঁর স্বামীকে অসুখী করে। তিনি সব কিছু তাঁর স্বামীর সঙ্গে সহভাগিতা করে করতে চান। এক জন প্রকৃত খ্রীষ্টিয়ানও সেই রুপে এমন কোন কাজ করেন না যা খ্রীষ্টকে অসন্তুষ্ট করে - যেমন তিনি এমন কোন চলচ্চিত্র দেখেন না যা যীশু দেখতে পারেন না। যীশুর সঙ্গে এক সাথে করতে পারবেন না এমন কোন কাজও তিনি করেন না। আপনি নতুন জন্ম লাভ করেছেন কি না সেই বিষয়ে আপনি কি নিশ্চিত হতে পারেন? হাঁ, রোমীয় ৮১৬ পদে বলা হয়েছে যে আপনি যখন নতুন জন্ম লাভ করবেন, তখন ঈশ্বরের পবিত্র আত্মা আপনার আত্মার কাছে সাক্ষ্য দেবেন যে আপনি ঈশ্বরের এক সন্তান।

এটা একটা আশ্চর্য্য জীবন - কারণ আমরা এমন এক জন প্রিয়তম বন্ধুর সঙ্গে বাস করছি যা কেউ কখনও পেতে পারে না। আমরা কখনও নিঃসঙ্গ হব না কারণ যীশু সর্বদা এবং সর্বত্র আমাদের সঙ্গে থাকেন। আমরা আমাদের সমস্ত সমস্যা তার কাছে বলতে পারি এবং সেই সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য তাঁর কাছে সাহায্য যাঞ্চা করতে পারি। এটি একটি আনন্দপূর্ণ জীবন যা সমস্ত চিন্তা এবং ভয় থেকে মুক্ত - কারণ যীশু তাঁর হস্তে আমাদের ভবিষ্যৎ ধরে আছেন। আপনি যদি নতুন জন্ম লাভ করতে চান, তবে আপনি এখনই আপনার হৃদয় থেকে আন্তরিকভাবে সদাপ্রভুর কাছে এই কথাগুলো বলুন

"প্রভু যীশু, আমি বিশ্বাস করি যে তুমি ঈশ্বরের পুত্র। আমি একজন পাপী এবং নরকে যাওয়ার যোগ্য। আমাকে প্রেম করার জন্য এবং আমার পাপের জন্য ক্রুশের ওপর মৃত্যুবরণ করার জন্য তোমাকে ধন্যবাদ জানাই। আমি বিশ্বাস করি তুমি পুণরুত্থিত হয়েছিল এবং আজও তুমি বেচেঁ আছ। আমি এখনই আমার পাপপুর্ণ জীবন থেকে ফিরে আসতে চাই। অনুগ্রহ করে তুমি আমার সমস্ত পাপ ক্ষমা কর এবং পাপের প্রতি তুমি আমাকে ঘৃণা দাও। যারা যে কোনভাবে আমার অনিষ্ট করেছে তাদের সকলকে আমি ক্ষমা করি। প্রভু যীশু আমার জীবনে তুমি এসো এবং আজ থেকে সারা জীবন তুমি আমার প্রভু হও। এখনই তুমি আমাকে ঈশ্বরের সন্তান কর।"

ঈশ্বরের বাক্য বলে,"কিন্তু যত লোক তাঁহাকে গ্রহন করিল, সেই সকলকে, যাহারা তাঁহার নামে বিশ্বাস করে তাহাদিগকে, তিনি ঈশ্বরের সন্তান হইবার ক্ষমতা দিলেন " (যোহন ১১২)। প্রভু যীশু বলেন, "যে আমার কাছে আসিবে, তাহাকে আমি কোন মতে বাহিরে ফেলিয়া দিব না" (যোহন ৬৩৭)।

সুতরাং আপনি নিশ্চিত হতে পারেন যে তিনি আপনাকে গ্রহন করেছেন।

আপনি তাঁকে এই কথা বলে ধন্যবাদ জানাতে পারেন, "প্রভু যীশু, আমাকে ক্ষমা করার জন্য এবং গ্রহণ করার জন্য আমি তোমাকে ধন্যবাদ দিই। অনুগ্রহ করে আমাকে তোমার পবিত্র আত্মা দ্বারা পূর্ন কর এবং তোমার জন্য বাঁচতে আমাকে সাহায্য কর। আমি আজ থেকে আজীবন তোমাকে সন্তুষ্ট করতে চাই।"

এখন প্রতিদিন আপনার ঈশ্বরের বাক্য পাঠ করা উচিত এবং প্রতিদিন আপনাকে পবিত্র আত্মার পূর্ন করার জন্য প্রভুর কাছে যাঞ্চা করা উচিত। এছারাও আপনার অন্য নতুন জন্ম প্রাপ্ত খ্রীষ্টিয়ানদের সঙ্গে সহভাগিতা করা প্রয়োজন। কেবলমাত্র এইভাবেই আপনি খ্রীষ্টিয় জীবনে বৃদ্ধি লাভ করতে পারবেন এবং অনবরতঃ প্রভুকে অনুসরণ করার শক্তি লাভ করতে পারবেন। সুতরাং প্রভুর কাছে আপনি যাঞ্চা করুন তিনি যেন আপনাকে একটি উত্তম মন্ডুলীতে নিয়ে যান।

প্রভু আপনাকে প্রচুর রুপে আশীর্ব্বাদ করুন।