WFTW Body: 

১-থিষলনীকীয় ৪:১৩-১৮ তে খ্রীষ্টের যখন আবার আগমন হবে তখন তা কেমন হবে সে সম্পর্কে পৌল বলেছেন। " আমরা চাহি না যে, যাহার নিদ্রাগত হয়, তাহাদের বিষয়ে তোমরা অজ্ঞাত থাক "। এটি খ্রীষ্টতে যারা মারা গেছেন তাঁদেরকেই বোঝায়। প্রভু যীশু মারা গিয়েছিলেন এবং আবার উত্থাপিত হয়েছেন; আর যারা খ্রীষ্টে মারা গিয়েছেন তাঁরাও পুনরুত্থিত হবেন। যখন প্রভু যীশুর আবার আগমন হবে, তখন আমাদের আগে খ্রীষ্টে যারা মারা গিয়েছিলেন তাঁদের আগে আমরা যারা বেঁচে আছি আমাদের নিয়ে যাওয়া হবে না। তাঁরা কবর থেকে উত্থিত হবেন। এটাই হবে প্রথম পুনরুত্থান এবং প্রভুর সাথে দেখা করার জন্য আমরাও তাঁদের সাথে একযোগে ঊর্দ্ধে নীত হব। অবিশ্বাসীরা আরও এক হাজার বছরের জন্য উঠবে না। দ্বিতীয় পুনরুত্থানের মাধ্যমে তারা উঠবে।

তাঁর পুনরাগমনের সময়, আমাদের প্রভু আনন্দধবনি সহ, প্রধান দূতের রব সহ এবং ঈশ্বরের তূরীবাদ্য সহ অবতরণ করবেন। তখন সমস্ত পবিত্র ব্যক্তিরা (সাধুগণেরা) মেঘের মধ্যে প্রভুর সাথে দেখা করার জন্যে মিলিত হবেন। যীশু সেই একই বিষয়গুলির সম্পর্কে বলেছেন, যখন তিনি তাঁর শিষ্যদের সাথে তাঁর ফিরে আসার বিষয়ে কথা বলছিলেন। তিনি বলেছেন "লোকে যদি তোমাদিগকে বলে ' দেখ, তিনি প্রান্তরে', তোমরা বাইরে যাইও না; 'দেখ, তিনি অন্তরাগারে', তোমরা বিশ্বাস করিও না " (মথি ২৪:২৬)। তিনি যা বলছিলেন তা হল তিনি গোপনে আসবেন না, আজ অনেকেই যা বিশ্বাস করেন। যখন তিনি আসবেন সেই সময় পূর্ব থেকে পশ্চিমে বজ্রপাতের ঝলকানির মতো হবে। প্রতিটি চোখই তাঁকে দেখতে সক্ষম হবে।

খ্রীষ্টের আগমন কখন হবে? যীশু এর উত্তরও দিয়েছেন, " আর সেই সময়ের ক্লেশের পরেই" (মথি ২৪:২৯)। অনেকে বিশ্বাস করেন যে খ্রীষ্ট তাঁর পবিত্র লোকেরদের (সাধুগণ) ক্লেশের আগে পরমানন্দে তুলে নেবেন। কিন্তু শাস্ত্রে কোথাও একটিও পদ নেই যা এই বিষয়ে শিক্ষা দেয়, এটি মানুষেরই মতবাদ। যীশু নিজেই স্পষ্টভাবে বলেছেন যে তাঁর আগমন ক্লেশের পরেই হবে। ১-থিষলনীকীয় ৪:১৬, ১৭ তে উল্লিখিত ঘটনাগুলি এবং মথি ২৪:৩০, ৩১ তে যীশুর দ্বারা বর্ণিত ঘটনাগুলি ঠিক একই রকম: মেঘে স্বর্গদূতেদের সঙ্গে ও তূরীধ্বনি সহযোগে যীশুর আগমন হবে এবং তাঁর পবিত্র লোকেরা (সাধুগণ) তাঁর সাথে মিলিত হওয়ার জন্যে ঊর্দ্ধে নীত হবেন।

১-থিষলনীকীয় ৫:২ তে আমরা পড়ি, " রাত্রিকালে যেমন চোর, তেমনি প্রভুর দিন আসিতেছে"। চোর তার আসার কথা ঘোষণা করে না, তবে সে অপ্রত্যাশিত ভাবেই আসে। সুতরাং, প্রভুর পুনরাগমনের সময় প্রত্যেক অবিশ্বাসীরা অবাক হবেন। আমরা, দীপ্তির সন্তানরা অবশ্য আমাদের প্রভুর আগমনের প্রত্যাশা করছি (১-থিষলনীকীয় ৫:৪)। আমরা অন্ধকারে বাস করি না। সুতরাং আমাদের আধ্যাত্মিকভাবে নিদ্রামগ্ন হওয়া উচিত নয়, তবে সতর্ক থাকা উচিত (১-থিষলনীকীয় ৫:৬)।

আমরা জেগে আছি না কী নিদ্রামগ্ন কীভাবে আমরা তা জানতে পারব? কোনও মানুষ যখন নিদ্রামগ্ন থাকে, ঘরে তাঁর চারপাশের সকল বাস্তব বিষয়গুলি অদৃশ্য থাকে; কিন্তু অবাস্তব বিষয়গুলি (তাঁর স্বপ্নগুলিতে) বাস্তব হিসাবে উপস্থিত হয়। একইভাবে, যখন একজন বিশ্বাসী আধ্যাত্মিকভাবে নিদ্রামগ্ন থাকে তখন অনন্তকালীন বাস্তব বিষয়গুলি তাঁর কাছে অবাস্তব হিসাবে প্রদর্শিত হয় আর এই দুনিয়ার অবাস্তব বিষয়গুলি তাঁর কাছে বাস্তব হিসাবে প্রদর্শিত হয়। স্বর্গ এবং অনন্তকালের সঙ্গে তুলনা করলে এই পুরো বিশ্বটি এক অবাস্তব স্বপ্নের মতো। সত্যকারের অনন্তকালীন বিষয়গুলি হল স্বর্গেরই জিনিস। যারা নিদ্রামগ্ন বিশ্বাসী, তাদের জন্য প্রভু অবশ্যই রাতের বেলা চোরের মতই আসবেন। পৌল বলেছেন যে আমরা সেই দিনের অপেক্ষায় রয়েছি এবং আমরা অধীর আগ্রহে তাঁর আসার অপেক্ষা করছি।

আমাদের চারপাশের লোকেরা ভাবতে থাকবে যে সবকিছু শান্তিপূর্ণ এবং নিরাপদ (১-থিষলনীকীয় ৫:৩)। কিন্তু তখনই তাদের উপর হঠাৎ বিনাশ নেমে আসবে। এটি এখানে বলে যে সেই বিনাশ হঠাৎ করেই আসবে " যেমন গর্ভবতীর প্রসব-বেদনা উপস্থিত হইয়া থাকে" (১-থিষলনীকীয় ৫:৩)। শেষের দিনের বিষয়ে বলতে গিয়ে যীশু একই অভিব্যক্তিটি ব্যবহার করেছিলেন (মথি ২৪:৮ মধ্যে)। প্রতিটি মহিলা জানেন যে সন্তানের জন্ম দেওয়ার আগে সেখানে প্রসবের একটি যন্ত্রণাদায়ক সময় রয়েছে যা বহু ঘন্টা স্থায়ী হতে পারে। (কিছু মা বলেন যে এটি এতটা যন্ত্রণাদায়ক ছিল যে তাদের মরার মত অনুভূতি হয়েছিল)। এটির পরেই কেবল সন্তানের জন্ম হয়। এটিই খ্রীষ্টের আগমনের পূর্বে ক্লেশের যন্ত্রণাদায়ক সময়গুলির চিত্র। এই প্রসব-যন্ত্রণা ছাড়া কোনও সন্তানের জন্ম হয় না। একইভাবে, প্রভুর আগমনও এই যন্ত্রণাদায়ক ক্লেশের আগে ঘটবে না। আমরা সেই সময়কালে জন্যে ভয় পাই না। প্রভু যদি আমাদের এখানে তাঁর জন্য সাক্ষী হিসাবে থাকতে ও সুসমাচারের জন্য আমাদের জীবন উত্সর্গ করার অনুমতি দেন তবে তা আমাদের জন্য বড় সম্মানের বিষয়।