ঈশ্বরকে জানার চেয়ে পবিত্র বাইবেল জানা সহজ, কারণ বাইবেল বুঝতে হলে আপনাকে কোনও মূল্য দিতে হবে না। কেবল এটি অধ্যয়ন করেই করতে হবে।

এমনকি যদি আপনি বাইবেল ভালোভাবে জানেন, তবুও আপনার ব্যক্তিগত জীবন এবং চিন্তাভাবনায় আপনি অনৈতিক এবং অপবিত্র হতে পারেন। আপনি একজন ভালো এবং সুপরিচিত প্রচারক হতে পারেন, কিন্তু তবুও টাকার প্রতি লোভী হতে পারেন। কিন্তু ঈশ্বরকে জানা সত্ত্বেও, আপনি একজন অপবিত্র এবং অনৈতিক ব্যক্তি হতে পারেন না। আপনি ঈশ্বরকে জানার পরে টাকার প্রতি লোভী হতে পারেন না। এটা একেবারেই অসম্ভব। আর এই কারণেই বেশিরভাগ প্রচারক নিজের জন্য সহজ পথ বেছে নেন; ঈশ্বরকে জানার চেষ্টা করার পরিবর্তে, তারা বাইবেল জানার/বোঝার চেষ্টা করেন।

ভাইয়েরা, আমি আপনাদের জিজ্ঞাসা করতে চাই, আপনারা কি কেবল বাইবেল জেনে খুশি, নাকি ঈশ্বরকে জানার জন্য আপনাদের হৃদয়ে তীব্র আকাঙ্ক্ষা আছে? ফিলিপীয় ৩:৮-১০ পদে পৌল বলেছেন যে তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় আকাঙ্ক্ষা হল ঈশ্বরকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে জানা। পৃথিবীর সমস্ত ভালো জিনিস তাঁর তুলনায় আবর্জনার মতো। পৌল সেই মহামূল্যবান মুক্তাটি পাওয়ার জন্য তাঁর সমস্ত মূল্যবান মুক্তা ত্যাগ করেছিলেন। পৌলের সেবাকার্যের রহস্য এই ছিল না যে তিনি গামালিয়েলের সেমিনারিতে বছরের পর বছর বাইবেল অধ্যয়ন করেছিলেন, বরং তাঁর সাফল্য ছিল ঈশ্বর সম্পর্কে তাঁর গভীর ব্যক্তিগত জ্ঞানের কারণে।

অনন্ত জীবনের অর্থ হল আমরা ঈশ্বর এবং তাঁর পুত্র, প্রভু যীশু খ্রীষ্টকে ব্যক্তিগতভাবে জানা (যোহন ১৭:৩)।

আমরা হয়তো অনন্ত জীবনকে স্বর্গে চিরকাল বসবাস হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেছি। কিন্তু প্রভু যীশু এটাকে সেভাবে সংজ্ঞায়িত করেননি। স্বর্গে যাওয়া বা নরক থেকে পালানোর সাথে অনন্ত জীবনের কোন সম্পর্ক নেই। এটি প্রভুকে জানার সাথে সম্পর্কিত। ঈশ্বরকে ঘনিষ্ঠভাবে এবং ব্যক্তিগতভাবে জানা আমার জীবনের আবেগ এবং আমার হৃদয়ের বোঝা। আমি জানি যে আমার সেবাকার্য ঐশ্বরিক কর্তৃত্ব লাভ করতে পারে কারণ আমি ব্যক্তিগতভাবে ঈশ্বরকে জানি। আর তাই, আমাদের সকল মণ্ডলীতে, আমি মানুষকে স্বয়ং ঈশ্বরের জ্ঞানের দিকে পরিচালিত করার চেষ্টা করেছি।

ইতিহাসে আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় আজ বাইবেলের জ্ঞান অনেক বেশি। পেন্টিকস্টের পর প্রায় ১৫০০ বছর ধরে, কোথাও কোনও মুদ্রিত/লিখিত বাইবেল পাওয়া যায়নি। গত দুই শতাব্দীতেই বাইবেল এত সহজলভ্য হয়ে উঠেছে। আজ, আমাদের কাছে অনেক সংস্করণ, অনুবাদ এবং অধ্যয়ন-সহায়ক রয়েছে।

কিন্তু তুমি কি মনে করো বাইবেলের এই বর্ধিত জ্ঞান আরও পবিত্র খ্রীষ্টান তৈরি করছে? না, যদি বাইবেলের জ্ঞান পবিত্রতা তৈরি করতে পারত, তাহলে আজ আমাদের ইতিহাসের সবচেয়ে ধার্মিক মানুষ থাকত। কিন্তু আমরা তা করি না। যদি বাইবেলের জ্ঞান পবিত্রতা তৈরি করতে পারত, তাহলে শয়তান নিজেই পবিত্র হতো - কারণ তার মতো কেউ বাইবেল এত ভালোভাবে জানে না।

আজ আমাদের অনেক বাইবেল কলেজ আছে যারা হাজার হাজার ছাত্রকে বাইবেল শিক্ষা দেয়। কিন্তু আজকের বিশ্বের সবচেয়ে ধার্মিক মানুষ কি সেই বাইবেল কলেজগুলিতে পাওয়া যায়? না। আজ অনেক বাইবেল কলেজ স্নাতক পরজাতীয়দের চেয়েও খারাপ অবস্থায় আছেন।

কয়েক বছর আগে, আমি ভারতের অন্যতম বৃহৎ ধর্মপ্রচারক শিক্ষালয়ের একজন স্নাতকের সাথে দেখা করেছিলাম যিনি তার স্নাতক শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন। তিনি আমাকে বলেছিলেন যে, সেই বাইবেল কলেজে তিন বছর কাটানোর পর, তার আধ্যাত্মিক অবস্থা যখন সে প্রথমবার সেখানে পড়তে এসেছিল তার চেয়েও খারাপ ছিল। তাহলে সেই বাইবেল কলেজ তাকে কী শিখিয়েছিল? তিনি তাকে বাইবেল এবং খ্রীষ্টধর্ম সম্পর্কে তথ্য শিখিয়েছিলেন। শয়তান নিজেই এই ধরণের বাইবেল কলেজের ক্লাসে প্রথম হয়ে স্নাতক হতে পারত।

সেই যুবক যদি রাগ, তিক্ততা, কামপূর্ণ চিন্তাভাবনা এবং অর্থের প্রতি ভালোবাসা কাটিয়ে না উঠতেন, তাহলে দর্শন/সাহিত্য, এবং "উচ্চ সমালোচকরা" কী বলেছিলেন এবং হিব্রু শব্দগুলির মূল অর্থ কী ছিল তা শেখার কী লাভ ছিল? তার নতুন অর্জিত সার্টিফিকেটের মাধ্যমে, সে শীঘ্রই একটি গির্জার যাজক হবে। কিন্তু তিনি তার গির্জার লোকেদের কী শিক্ষা দেবেন, যাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা ধর্মীয় নয় বরং নৈতিক হবে? এইসব ক্ষেত্রে সে তাদের কোনওভাবেই সাহায্য করতে পারবে না। এইভাবে, ভারতে ঈশ্বরের কাজ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।

আপনি যদি নিজে ঈশ্বরকে জানেন তবেই আপনি আপনার পালকে তাঁকে (ঈশ্বরকে) জানার জন্য পরিচালিত করতে পারবেন। যদি আপনি আপনার জীবনে পাপকে জয় করে থাকেন, তাহলে আপনি আপনার পালকেও পাপের উপর বিজয়ের দিকে নিয়ে যেতে পারবেন। তারপর তারাও কর্তৃত্ব ও শক্তির সাথে প্রভুর সেবা করতে প্রস্তুত হবে।

আপনার কি মনে হয় শয়তান কারো বাইবেলের জ্ঞান অথবা ডিগ্রি এবং সার্টিফিকেট দেখে মুগ্ধ হয়? মোটেও না। শয়তান কেবল ঈশ্বরকে জানা এমন পবিত্র, নম্র পুরুষ ও নারীদেরই ভয় পায়।