WFTW Body: 

নতুন নিয়মের সুসমাচার মূলত এই: যে আমরা ঐশ্বরিক স্বভাবে অংশ গ্রহণ করতে পারি। ঈশ্বরের স্বভাব হল প্রেম - এবং প্রেমের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল এটি তার নিজের জন্য কিছু অন্বেষণ করে না। কারণ প্রভু যীশু তাঁর নিজের কোন স্বার্থ অন্বেষণ করেননি তাই তিনি আমাদের বাঁচানোর জন্য স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে নেমে এসেছিলেন। ঈশ্বর আমাদের জন্য তাঁর প্রেমকে এক স্তন্যদানকারী মাতৃ প্রেমের সাথে তুলনা করেছেন (যিশাইয় ৪৯:১৫)। প্রেমের সবচেয়ে বড় প্রদর্শন হল একজন মায়ের তার নবজাতক শিশুর জন্য প্রেম, যা পৃথিবীতে কেউ দেখতে পারেন - একজন ভাল মা তার সন্তানের জন্য নিঃস্বার্থভাবে সবকিছু করেন, বিনিময়ে কিছুই আশা করেন না। ঈশ্বরের প্রেমও এইরূপ হয় - এই স্বভাবেই আমাদের অংশগ্রহন করতে হবে। তাহলে আমরা প্রভু যীশুর মতো ঈশ্বরের লোকেদের সেবা করতে পারব।

প্রেম হল জ্বালানি যা খ্রীষ্টীয় জীবনকে চালায়। গাড়ির গ্যাস-ট্যাঙ্ক (জ্বালানি-ট্যাঙ্ক) খালি থাকলে তাকে ঠেলে ঠেলে নিয়ে যেতে হয়। এভাবেই, যেখানে প্রভুর প্রতি আকুল প্রেম শুকিয়ে গেছে, সেখানে তাঁর জন্য আমাদের শ্রম ভারী এবং বোঝা হয়ে উঠবে, গাড়ি ঠেলে ঠেলে নিয়ে যাওয়ার মতো। তখন আমাদের চারপাশে অন্যদের দুর্বলতা এবং মূর্খতা সহ্য করাও কঠিন হয়ে পড়বে। তাই ট্যাঙ্ক ভর্তি করার জন্য আমাদের বারবার পেট্রোল-পাম্পে (গ্যাস-স্টেশন) যেতে হয়। "নিরন্তর আত্মায় পরিপূর্ণ হও" (ইফিষীয় ৫:১৮)।

ক্রোধের এবং চোখের দ্বারা লালসার উপর বিজয় হল ঐশ্বরিক স্বভাবে অংশ গ্রহণের চূড়ান্ত লক্ষ্যের জন্য একটি প্রস্তুতি মাত্র। আমাদের মাংস নিতান্তই স্বার্থপর, এবং এই স্বার্থপর স্বভাবকে প্রতিদিন মৃত্যুসাৎ করতে হবে। আমাদের নিজস্ব লাভ বা সম্মান বা স্বাচ্ছন্দ্য বা আমাদের নিজস্ব কিছু অন্বেষণ করলে হবে না - কারণ এটি চিরন্তন মৃত্যুর পথ। জীবনের পথ হল আমাদের জীবনে একমাত্র ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করার জন্য নিজেদেরকে সম্পূর্ণরূপে দান করা, তার জন্য আমাদের যাই মূল্য দিতে হোক না কেন। আমাদের অবশ্যই প্রতিদিন, এবং দিনের অনেকবার নিজেদের বিচার করতে হবে - ভিতরের দিকে তাকিয়ে নয়, বরং ঊর্ধ্বে প্রভু যীশুর দিকে তাকানোর মাধ্যমে - এবং এইভাবে সেই ক্ষেত্রগুলি আবিষ্কার করতে হবে যেখানে আমরা ঈশ্বরের গৌরব নয় বরং আমাদের জন্য নিজস্ব কিছু অন্বেষণ করছি৷ এভাবেই আমরা নিজ স্বার্থান্বেষন থেকে আমাদের শুদ্ধ করতে পারব। এটি পূর্ণতার পথ। খুব কম লোকই নিজেদেরকে বিশ্বস্তভাবে সমস্ত মাংসিক এবং আত্মিক নোংরামি থেকে পরিষ্কার করতে আগ্রহী (২ করিন্থীয় ৭:১) - আর সেই কারণেই খুব কম লোকই সত্যিকারের ধার্মিক জীবনের জন্য বেড়ে ওঠে।

প্রভু যীশু বলেছিলেন যে শুধুমাত্র "আক্রমণকারীরা" ঈশ্বরের রাজ্যের অধিকারী হবে (মথি ১১:১২)। এর অর্থ হলো আমাদের অবশ্যই নিজেদের মধ্যে সেগুলির প্রতি আক্রমনাত্মক হতে হবে যেগুলি ঈশ্বরের আদেশের আনুগত্যের পথে দাঁড়ায়। বড় বড় আদেশের প্রতি আমাদের আনুগত্যের দ্বারা নয় যার দ্বারা আমরা আমাদের আনুগত্য প্রমাণ করি। না। যীশু বলেছিলেন, যে ব্যক্তি নিজেও পালন করে এবং অন্যদেরকে সামান্যতম আজ্ঞা পালন করতে শেখায় তাকে ঈশ্বরের রাজ্যে মহান বলা হবে (মথি ৫:১৯)। একটি ছোট শিশুর বাধ্যতার পরীক্ষা কখনই তার কাউকে হত্যা না করার বা স্কুলে ব্যভিচার না করার মাধ্যমে করা যায় না। না। বরং এটি পরীক্ষা করা যায় যখন তার মা তাকে সাহায্য করার জন্য ডাকে, এবং সেই সময় তার খেলার ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও, যখন সে তার মায়ের আজ্ঞা পালন করে, তার মাধ্যমে। এই বিষয়টি ঈশ্বরের সাথে আমাদের সম্পর্কের মধ্যেও রয়েছে। দৈনন্দিন জীবনের ছোট ছোট বিষয়েই আমাদের বিশ্বস্ত হতে হবে। অন্যথায় আমরা অবাধ্য।

মথি ১৩:৪৩ পদে প্রভু যীশু বলেছিলেন যে "ধার্ম্মিকরা সূর্যের মতো উজ্জ্বল হবে"। সূর্য অবিরত লক্ষ লক্ষ ডিগ্রী তাপমাত্রায় জ্বলছে। তাই কোন জীবাণু বা ব্যাকটেরিয়া এটিতে বেঁচে থাকতে পারে না। এইভাবে প্রভু চান যেন আমরাও সেই প্রকার হই - সর্বদা তাঁর জন্য জ্বলতে থাকি, বিশুদ্ধতার জন্য সর্বদা উদ্যোগী এবং উত্সাহী, অন্যদের সেবা করতে এবং তাদের আশীর্বাদ করতে, নিজেদেরকে নম্র করতে, সভাগুলিতে সাক্ষ্য দিতে এবং মণ্ডলী তৈরি করার জন্য যেন সর্বদা জ্বলতে থাকি। তোমাদের মত যারা যুবক তাদের এই ব্যাপারে অগ্রগামী হওয়া উচিত। মথি ১৩ অধ্যায় ৪৪ থেকে ৪৬ এই তিনটি পদে, প্রভু যীশু ব্যাখ্যা করেছেন কীভাবে আমরা সর্বদা জ্বলতে পারি, দুটি দৃষ্টান্তের মাধ্যমে (একটি ক্ষেতের ধন সম্পর্কে এবং অন্যটি মহামূল্যবান মুক্ত সম্পর্কে)। এই উভয় দৃষ্টান্তের মধ্যে, আমরা সেই একটি শব্দগুচ্ছ বারবার দেখতে পাই - "তিনি তার সমস্ত কিছু বিক্রয় করেছেন"। এটিই হল রহস্য। আমাদের স্ব-ইচ্ছা, আমাদের অধিকার, আমাদের সম্মান, আমাদের সুযোগ-সুবিধা, সবকিছু ত্যাগ করতে হবে। তবেই আমরা সূর্যের মতো থাকতে পারি - সর্বদা জ্বলন্ত।