WFTW Body: 

"সকলই তাঁহার নিমিত্ত" (রোমীয় ১১:৩৬)। ঈশ্বর হলেন আলফা এবং ওমেগা, আদি এবং অন্ত, প্রথম এবং শেষ। আর তাই, চিরন্তন প্রকৃতির সমস্ত জিনিস যেমন তাঁর মধ্যে উদ্ভূত হয়, তারাও তাদের পরিপূর্ণতা তাঁর মধ্যে খুঁজে পায়। সমস্ত জিনিস ঈশ্বরের দ্বারা সৃষ্টি হয়েছে তাঁর মহিমার জন্য। এটির কারণ এই নয় যে ঈশ্বর স্বার্থপরভাবে আমাদের গৌরব চান৷ তিনি নিজের মধ্যে পূর্ণরূপে স্বয়ংসম্পূর্ণ, এবং এমন কিছু নেই যা আমরা তাঁকে দিতে পারি যা তাঁর পর্যাপ্ততায় কিছু যোগ করতে পারে। যখন তিনি আমাদেরকে তাঁর মহিমা অন্বেষণ করার জন্য আহ্বান করেন, তখন এটি আমাদের নিজস্ব সর্বাধিক মঙ্গলের পথ। অন্যথায় আমরা আত্মকেন্দ্রিক এবং কৃপণ হয়ে উঠবো।

তাঁর মধ্যে কেন্দ্রীভূত হওয়ার বিষয়টি হলো এমন একটি নিয়ম যা ঈশ্বর জগত সৃষ্টিতে তৈরি করেছেন। শুধুমাত্র স্বাধীন ইচ্ছা সম্পন্ন নৈতিক প্রাণীরা সেই নিয়ম লঙ্ঘন করতে পারে। নির্জীব সৃষ্টি আনন্দের সাথে তার স্রষ্টার আনুগত্য স্বীকার করে এবং তাঁকে মহিমান্বিত করে। কিন্তু আদম সেই নিয়ম অমান্য করেছিল, এবং আমরা মনুষ্যজাতির দুর্দশার পরিণতি দেখতে পাই।

যে প্রার্থনায় প্রভুযীশু তাঁর শিষ্যদের প্রার্থনা করতে শিখিয়েছিলেন, তার প্রথম অনুরোধটি হল, "তোমার নাম পবিত্র বলিয়া মান্য হোক" (মথি ৬: ৯)। প্রভুযীশুর হৃদয়ে এটাই ছিল প্রাথমিক আকাঙ্ক্ষা। তিনি প্রার্থনা করেছিলেন "পিতঃ, তোমার নাম মহিমান্বিত কর" এবং ক্রুশের পথ বেছে নিয়েছিলেন যেহেতু এটি পিতার মহিমার জন্য ছিল (যোহন ১২: ২৭, ২৮)।

একটি সর্বোচ্চ গভীর আসক্তি প্রভু যীশুর জীবনকে পরিচালনা করেছিল - তা হলো পিতার মহিমা। তিনি যা কিছু করেছেন তা সবকিছুই পিতার মহিমার জন্য। তাঁর জীবনে আলাদাভাবে কোনো পবিত্র বা সাংসারিক কক্ষ ছিল না। সবকিছুই পবিত্র ছিল। ঈশ্বরের মহিমার জন্য যেভাবে তিনি টেবিল, বেঞ্চ প্রভৃতি (কাঠের আসবাবপত্র) তৈরি করার কাজ করেছিলেন ঠিক সেভাবেই তিনি ঈশ্বরের মহিমার জন্য পীড়িতদের সুস্থ এবং প্রচার কার্য করেছিলেন। প্রতিটি দিন তাঁর কাছে সমানভাবে পবিত্র ছিল; এবং ঈশ্বরের কাজ বা দরিদ্রদের জন্য ব্যয় করা অর্থের মতোই দৈনন্দিন জীবনযাত্রার প্রয়োজনে ব্যয় করা অর্থ ছিল পবিত্র।

প্রভুযীশু সর্বদা সম্পূর্ণরূপে হৃদয়ের বিশ্রামে থাকতেন, কারণ তিনি কেবল পিতার মহিমা চেয়েছিলেন এবং শুধুমাত্র তাঁর পিতার অনুমোদনের জন্যই যত্নবান ছিলেন। তিনি তাঁর পিতার সম্মুখে জীবনযাপন করতেন এবং মানুষের সম্মান বা প্রশংসা পাওয়ার অন্বেষণ করেননি। যীশু বলেছেন "যে আপনা হইতে বলে, সে আপনারই গৌরব চেষ্টা করে" (যোহন ৭:১৮)।

প্রাণিক (জাগতিক) খ্রীষ্টান সে যতই ঈশ্বরের গৌরব অন্বেষণ করার অভিনয় করুক না কেন, প্রকৃতপক্ষে, গভীরভাবে, তার নিজের সম্মানে আগ্রহী। অন্যদিকে যীশু কখনো নিজের জন্য কোনো সম্মান চাননি। যা মানুষের চতুরতা থেকে উদ্ভূত হয় এবং মানুষের দক্ষতা এবং প্রতিভার দ্বারা সঞ্চালিত হয়, তা সর্বদা মানুষকে মহিমা দিয়ে শেষ হবে। প্রাণের সাথে যা শুরু হয় তা কেবল সৃষ্টিকে মহিমান্বিত করবে। কিন্তু স্বর্গে বা পৃথিবীতে অনন্তকালের জন্য এমন কিছুই থাকবে না যা কোন মানুষকে সম্মান বা গৌরব দেবে। যা কিছু সময়ের সাথে বেঁচে থাকবে এবং অনন্তকলীন রাজ্যে প্রবেশ করবে তা হবে ঈশ্বরের কাছ থেকে, ঈশ্বরের মাধ্যমে এবং ঈশ্বরের জন্য।

একটি কর্মের পিছনে যা উদ্দেশ্য থাকে ঈশ্বরের দৃষ্টিতে সেই বিষয়টি সেই ক্রিয়াকে মূল্য এবং যোগ্যতা দেয়। আমরা যা (কার্য) করি তা গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু কেন আমরা তা করি তার (উদ্দেশ্য) অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।