WFTW Body: 

আমাদের গভীর আসক্তি হওয়া উচিৎ ঈশ্বরকে ভাল থেকে ভালভাবে জানা, কারণ এটিই অনন্ত জীবন। আমরা ঈশ্বরকে আরও বেশি করে জানার জন্য সমস্ত অনন্তকাল ব্যয় করতে চলেছি। এইজন্যই অনন্তকাল কারো কাছে ক্লান্তিকর হবে না যার আসক্তি ঈশ্বরকে জানার জন্য হবে। আমাদের পার্থিব জীবনও কোন রকম ক্লান্তিকর হবে না। আসুন আমরা ঈশ্বরের জীবন এবং তাঁর পথ সম্পর্কে আদিপুস্তক ২ অধ্যায় থেকে কিছু শিখি, যেভাবে তিনি আদমের সাথে আচরণ করেছিলেন। সেখানে আমরা দেখি যে ঈশ্বর যিনি দেখেছিলেন আদমের জন্য একজন স্ত্রীর প্রয়োজনীয়তা এবং তিনি সেই চাহিদা পূরণ করেছিলেন এবং তার জন্য একজন স্ত্রী নির্মাণ করেছিলেন। সেখানে আমরা দেখতে পাই ঈশ্বরের প্রকৃতি (স্বভাব) কেমন। ঈশ্বর সর্বদা মানুষের প্রয়োজনের জন্য সজাগ থাকেন এবং সেই চাহিদা পূরণের জন্য তিনি যে সমস্ত করতে পারেন তা করেন। যখন আমরা এই ঐশ্বরিক প্রকৃতিতে অংশ গ্রহণ করি, তখন আমরাও সেইরকম হয়ে যাব - আমাদের চারপাশের মানুষের চাহিদা এবং সমস্যাগুলির জন্য সর্বদা সতর্ক থাকব এবং সেই চাহিদাগুলি পূরণের জন্য আমরা যা করতে পারি তা করব! এক্ষেত্রে প্রায়শই আমাদের পক্ষ থেকে প্রচুর ত্যাগ স্বীকার থাকবে। অতএব আমাদের নিজেদেরকে জিজ্ঞাসা করা উচিৎ যে আমরা ঐশ্বরিক প্রকৃতিতে অংশ গ্রহণের জন্য এই মূল্য দিতে ইচ্ছুক কিনা।

আমাদের আদমীয় প্রকৃতি এই ঐশ্বরিক প্রকৃতির ঠিক বিপরীত। আদমের জীবন পুরোপুরি স্বার্থপর এবং আমাদেরকে শুধুমাত্র আমাদের নিজেদের প্রয়োজন এবং নিজের পরিবারের সদস্যদের চাহিদার প্রতি আমাদেরকে সজাগ করে তোলে। প্রকৃতপক্ষে এটি স্বার্থপরতা ও ঈর্ষায় এতটাই পরিপূর্ণ যে এটি চায় না যে অন্যের চাহিদা কারোর দ্বারাও পূরণ হোক। অপরদিকে, মানুষের কষ্ট দেখে এটি উপভোগ করে।

যখন মানুষ পাপ করেছিল, ঈশ্বর জীবনবৃক্ষের সামনে করূবদেরকে এবং একটি ঘূর্ণায়মান তেজোময় খড়গ (তলোয়ার) সেই বৃক্ষের পথ রক্ষা করার জন্য রাখলেন। জীবন বৃক্ষ হলো অনন্ত জীবনের প্রতীক - ঈশ্বরকে জানা। জীবন বৃক্ষের সামনে রাখা এই তলোয়ারের মাধ্যমে, ঈশ্বর প্রতীকীভাবে আদমকে দেখিয়েছিলেন যে এখন যদি কেউ জীবন বৃক্ষের অংশ নিতে চায়, তাকে প্রথমে তার নিজের স্বার্থপর জীবনের উপর খড়গ পড়ার অভিজ্ঞতা করতে হবে। আমরা আদিপুস্তক ৩:২১ পদে পড়ি যে, আদম ও হবা পাপ করার সাথে সাথেই ঈশ্বর এদনে একটি পশুকে হত্যা করেছিলেন এবং তাদের সেই পশুর চামড়ার বস্ত্র পরিয়ে দিয়েছিলেন। সেখানেও ঈশ্বর তাদের একই শিক্ষা দিয়েছিলেন - যে তাদের এখন বস্ত্র পরার একমাত্র উপায় ছিল ত্যাগস্বীকার ও মৃত্যুর দ্বারা। আদম এবং হবা প্রথমে কোন প্রকার "মৃত্যু" ছাড়াই নিজেদেরকে কাপড় পরানোর চেষ্টা করেছিলেন - কেবল ডুমুর পাতা দিয়ে। কিন্তু ঈশ্বর সেই পাতাগুলো ফেলে দিলেন এবং তাদেরকে কাপড় পরার সঠিক পথ দেখালেন। সুতরাং আমরা শুরু থেকেই দেখতে পাচ্ছি যে তাঁর সাথে মানুষের সহভাগিতা করার এবং তাঁর স্বভাবকে পরিহিত হওয়ার পথ হিসাবে ঈশ্বর ত্যাগস্বীকারের উপর জোর দিয়েছেন।

ঈশ্বর কয়িনকে বলেছিলেন যে তার গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হলো যে সে তার ভাই হেবলের প্রতি "সদাচরণ করে নাই" (আদিপুস্তক ৪:৭)। যিহূদা তাদের বিষয়ে বলেছিলেন যারা "কয়িনের পথে" চলে (যিহূদা ১১)। তারা কারা? তারাই হলো যারা তাদের ভাইদের প্রতি সদাচরণ করে না। এই বিষয়ে একটি আধ্যাত্মিক পরীক্ষা করা আমাদের সকলের জন্য উপযুক্ত। আপনি কি সৎভাবে বলতে পারবেন যে আপনি আপনার স্থানীয় মণ্ডলীর সকল ভাই-বোনদের জন্য এবং তাদের পরিবারের জন্য উত্কৃষ্ট কামনা করেন? আপনি কি এটাও বলতে পারবেন যে আপনি অন্যান্য বিশ্বাসীদের জন্য উত্কৃষ্ট কামনা করেন যাদেরকে আপনি অন্য সম্প্রদায়ের (মণ্ডলীর) মধ্যে জানেন? তাহলে বৃত্তটিকে আরও বিস্তৃত করুন এবং নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন যে আপনি কি আপনার পরিচিত প্রত্যেকের প্রতি উত্কৃষ্ট কামনা করেন, তা আপনার আত্মীয়স্বজন সহ আপনার শত্রু এবং যারা কোনভাবে আপনার ক্ষতি করেছে। যদি আপনি অন্য কোন ব্যক্তি বা তার সন্তানদের প্রতি ভাল কিছু ঘটলে আপনার হৃদয়ে (আনন্দের পরিবর্তে) অস্থিরতা খুঁজে পান, অথবা যদি আপনি তার বা তার পরিবারের সাথে খারাপ কিছু ঘটলে আপনার হৃদয়ে (দুঃখের পরিবর্তে) আনন্দ অনুভব করেন, তাহলে এই ধরনের মনোভাব কি নির্দেশ করে? শুধু এটাই যে আদমের জীবন আপনার মধ্যে জীবিত এবং সক্রিয় রয়েছে।

আপনি যদি নিজের প্রতি সৎ হোন, আপনি শীঘ্রই আবিষ্কার করবেন যে আপনি কয়িনের পথে হাঁটছেন কিনা। যখন আপনি আপনার ভিতরে সেই দুষ্ট আদমীয় জীবনকে দেখবেন তখন সেটাকে মৃত্যুদণ্ড দিতে আপনাকে সত্বর হতে হবে, যদি আপনি চান অগ্নি এবং ঈশ্বরের অভিষেক আপনার উপর অবিরত বিরাজ করুক।

যখন একটি গমের দানা মাটিতে পড়ে এবং পুরোপুরি মারা যায়, তখন প্রচুর ফল উৎপন্ন করে (যোহন ১২:২৪)। যিনি নিজের জন্য সম্পূর্ণভাবে মৃতবৎ হোন, তিনি কখনই ক্ষুব্ধ হবেন না, অন্যরা কি করছে বা না করছে তা কোন ব্যাপার নয়। তিনি সর্বদা সকলের প্রতি মঙ্গল কামনা করবেন। তিনি নিজের সাথে যুক্ত কোনো বিষয়ের দ্বারা নিজেকে রাগান্বিত করবেন না এবং তিনি কখনও কারও সাথে ঝগড়া করবেন না। তিনি কখনোই নিজের জন্য একফোঁটা অশ্রু ফেলবেন না - কারণ, মৃত মানুষরা তাদের কবরে কাঁদে না !!

কয়িনের মুখ বিষণ্ণ এবং অন্ধকার ছিল যখন সে তার ভাইয়ের প্রতি সদাচরণ পোষণ করত না (আদিপুস্তক ৪:৬)। আমরা হয়তো তা অনুভব করতে পারি না, কিন্তু আমাদের হৃদয়ে আমাদের যে মনোভাব রয়েছে তা প্রায়ই আমাদের মুখে প্রতিফলিত হয়। আপনি যদি সকলের প্রতি সদাচরণ করেন, আপনার মুখ সর্বদা প্রভুর আনন্দে উজ্জ্বল থাকবে। অনেক বিশ্বাসী কয়িনের পথে হাঁটছেন। তাদের মৃদু হাসি এবং তাদের ঠোঁটে আসা "প্রভুর প্রশংসা হোক", এই সম্বোধনের আড়ালে তাদের সহ-বিশ্বাসীদের প্রতি ভুল মনোভাব লুকিয়ে থাকে। যখন লোকেরা আপনার বিরুদ্ধে দাঁড়ায় এবং আপনার প্রতি খারাপ কাজ করে, তখন ঈশ্বর সেগুলিকে ব্যবহার করেন আপনার প্রকৃত হৃদয়ের অবস্থা পরীক্ষা (স্ক্যান) করতে। যদি আপনি তাদের ভালবাসতে না পারেন, আপনার হৃদয়-স্ক্যান দেখাবে যে আপনি ঈশ্বরের স্বভাবের অংশীদার নন, কারণ ঈশ্বরের প্রকৃতি হলো এমন এক যা তার শত্রুদেরও ভালবাসে। প্রভু যীশু এমনকি ঈস্করিয়োতীয় যিহূদার প্রতিও সদাচরণ করেছিলেন।

ঈশ্বর সকল মানুষের জন্য উত্কৃষ্ট চান। সুসমাচারের বার্তা হলো আমরাও এই স্বভাবের অংশ নিতে পারি। যারা সুসমাচারকে এইভাবে বোঝেননি তারা বাস্তাবে কোন সুসমাচারকেই বুঝতে পারেন নি।