WFTW Body: 

গীতসংহিতা ২৩ অধ্যায়টি হল মেষপালকের গীত। প্রভু যখন আমাদের মেষপালক হয়েছেন তখন আমাদের কোনও কিছুরই অভাব হবে না (পদ-১)। তিনি আমাদেরকে চারণভূমিতে শয়ন করান। তিনি আমাদের নেতৃত্ব দেন। তিনি আমাদের কে পুনরুদ্ধার করেন। তিনি আমাদের পথপ্রদর্শন করেন। প্রভুর জন্য আমাদের কি করনীয় তা নিয়ে প্রায়শই আমরা চিন্তা করি। কিন্তু এখানে 'প্রভু আমাদের জন্য যা করেন' সেই বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে। ঈশ্বরের জন্য আমরা তখনই কার্যকরী হতে পারি, যখন প্রথমে তাঁকে আমাদের মধ্যে (জীবনে) কার্য করার অনুমতি দিই। আমরা কোনও মন্দকে ভয় করিব না, কারণ তিনি সর্বদা আমাদের সাথে আছেন। তিনি আমাদের জন্য মেজ প্রস্তুত করেন এবং তিনি তৈল দিয়ে আমাদেরকে অভিষিক্ত করেন। ফলে আমাদের পানপাত্রগুলি উপচাইয়া ত্তঠে, সেইজন্যে, সর্বত্র সদাচরণ এবং করুণা আমাদের অনুসরণ করুক যতক্ষণ পর্যন্ত না আমরা সেই অনন্ত গৃহে পৌঁছাই।

গীতসংহিতা ৩৪ অধ্যায়টি ধার্মিকদের সাহায্যকারী হিসাবে প্রভুকে বর্ণনা করা হয়েছে। দায়ূদ এই গীতসংহিতাটি লিখেছিলেন, যখন প্রভু তাকে এক নিশ্চিত মৃত্যুর থেকে উদ্ধার করেছিলেন, যখন তিনি রাজা অবীমেলকের সামনে পাগল হওয়ার ভান করেছিলেন। সুতরাং তিনি বলেন, "আমি সর্বসময় সদাপ্রভুর ধন্যবাদ করিব। এই দুঃখী ডাকিল, সদাপ্রভু শ্রবণ করিলেন। আস্বাদন করিয়া দেখ প্রভু মঙ্গলময়" (পদ-১, ৬, ৮)। দায়ূদ স্বীকার করেছিলেন- "সদাপ্রভুর দূত, যাহারা তাঁহাকে ভয় করে, তাহাদের চারিদিকে শিবির স্থাপন করেন, আর তাহাদিগকে উদ্ধার করেন" (পদ-৭)। তিনি আরও দেখেছিলেন যে, "ধার্মিকগনের প্রতি সদাপ্রভুর দৃষ্টি আছে, তাহাদের আর্তনাদের প্রতি তাঁহার কর্ণ আছে" (পদ-১৫) এবং সেটা "সদাপ্রভু ভগ্নচিত্তদের নিকটবর্তী, তিনি চূর্ণমনাদের পরিত্রান করেন" (পদ-১৮)। দায়ূদ তাঁর অভিজ্ঞতা থেকে আরও বলেছেন যে, "ধার্মিকদের বিপদ অনেক" (পদ-১৯)। কখনও আপনি এটা ভাববেন না যে, ধার্মিক হলে আপনার সমস্যা হবে না। বরং আপনাকে আরও বেশি সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। "কিন্তু সেই সকল হইতে সদাপ্রভু তাহাকে উদ্ধার করেন" (পদ-১৯)। তারপরেও আর একটি খ্রীষ্টীয় ভবিষ্যদ্বাণী রয়েছে, "তিনি তাহার অস্থি সকল রক্ষা করেন; তাহার মধ্যে একখানিও ভগ্ন হয় না" (পদ-২০) - যা ক্রুশে পূর্ণ হয়েছিল।

গীতসংহিতা ৬৬ অধ্যায়ে, দায়ূদ ঈশ্বরের প্রশংসা করেছেন কারন তাঁকে একটি আশীর্বাদের জায়গায় নিয়ে আসার জন্য। কিন্তু ঈশ্বর তাঁকে অনেক পরীক্ষার মধ্য দিয়ে নিয়ে এসেছেন। পদ ১০ থেকে ১২, এই পদগুলিতে আমরা দেখতে পাই যে, সেই আধ্যাত্মিক সমৃদ্ধির স্থানে নিয়ে যাওয়ার আগে ঈশ্বর দায়ূদকে অসুস্থতা, আগুন এবং জল এবং মানুষের অত্যাচারের মধ্য দিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। এখানে "সমৃদ্ধির স্থান" অনুবাদ করা এই শব্দটি শাস্ত্রে কেবলমাত্র অন্য আর একটি জায়গায় ব্যবহৃত হয়েছে - গীতসংহিতা ২৩:৫ - যেখানে এটি "উপচাইয়া ত্তঠে" হিসাবে অনুবাদ করা হয়েছে। সুতরাং আশীর্বাদের উপচে পড়া জীবন লাভ করার উপায়টি হচ্ছে বিভিন্ন পরীক্ষা এবং কষ্টভোগের মধ্য দিয়ে যাওয়া। এই অধ্যায়ের পদ ১৮ টি হল আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পদ: "যদি চিত্তে অধর্মের প্রতি তাকাইতাম, তবে প্রভু শুনিতেন না"। প্রার্থনা হল ঈশ্বরের সাথে টেলিফোনে কথোপকথনের মতো। কিন্তু যদি আমাদের অন্তরে অস্বীকার করা পাপ থাকে, তবে ঈশ্বর আমাদের প্রার্থনা শোনার জন্য ফোন তুলবেন না ।

গীতসংহিতা ৯১ অধ্যায়টি ঘোষণা করে তাঁর আশীর্বাদ এবং সুরক্ষার বিষয়ে "যে ব্যাক্তি সর্বশক্তিমানের গোপন স্থানে" বসতি করে। আমাদের জন্য, সেই গোপন স্থানটি হ'ল প্রভু যীশুর ক্ষত স্থান। "সর্বশক্তিমানের ছায়ায়" বাস করা বলতে বোঝায় যে ঈশ্বর আমাদের সামনে যাচ্ছেন, এবং আমরা তাঁর ছায়াতে চলেছি (পদ-১)। গোটা বিশ্বের কাছে সবচেয়ে নিরাপদ জায়গাটি হল ঈশ্বরের নিখুঁত ইচ্ছার কেন্দ্রবিন্দু। ঈশ্বর আমাদেরকে উভয় শত্রুর - শয়তান (তার ফাঁদ) এবং পাপ (মারাত্মক রোগ) থেকে আমাদের উদ্ধার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন (পদ-৩)। তিনি আমাদের সুস্পষ্ট পাপ (দিবসকালীন বিপদ) এবং সূক্ষ্ম, বিভ্রান্তকারী পাপ (রাত্রিকালীন বিপদ) থেকে রক্ষা করিবেন (পদ-৫, ৬)। এমনকি যদিও আমাদের চারপাশের ১১,০০০ খ্রীষ্টানরা বিজয়ী জীবনকে বিশ্বাস না করে, তবুও তিনি আমাদেরকে পাপ হতে রক্ষা করিবেন (পদ-৭)। আমাদেরকে অনেক কষ্টের মুখোমুখি পড়তে হবে, তা সত্ত্বেও সেই সবের মধ্যে আমাদের কখনও কোন বিপদ আসবে না (পদ-১০)। ঈশ্বর তাঁর স্বর্গদূতদের নিয়োগ করেছেন যতক্ষণ আমরা তাঁর ইচ্ছায় চলছি আমাদের যত্ন নেওয়ার জন্য। ঈশ্বর আমাদের সমস্ত শয়তানকে (সিংহ এবং সর্প), সর্বদা আমাদের পায়ের নীচে পিষ্ট করিবেন (পদ-১৩)। ঈশ্বর আমাদের প্রার্থনার উত্তর দেবেন এবং আমাদেরকে উচ্চতর স্থানে স্থাপিত করিবেন এবং আমাদের দীর্ঘায়ু দেবেন, যাতে আমাদেরকে যে কাজের জন্য নিরূপিত করা হয়েছে তা সম্পন্ন না করা পর্যন্ত আমাদের মৃত্যু হবে না (পদ-১৫, ১৬)।