WFTW Body: 

১ যোহন ১: ৩ পদে, প্রেরিত যোহন লিখেছেন "আমাদের সহভাগিতা হলো পিতার সাথে"। প্রকৃত সহভাগিতা হলো দুটি দিকে, ক্রুশের দুটি বাহুর মতো। ক্রুশের মাধ্যমে আমরা ঈশ্বরের সাথে এবং একে অপরের সাথে সহভাগিতায় আসি। খ্রীষ্ট এবং আমাদের মাঝে একটি ক্রুশ রয়েছে যার উপরে তিনি মারা গিয়েছিলেন। যার কারণে আমরা আমাদের প্রভুর সাথে সহভাগিতা করতে পারি। এটি ছাড়া আমরা কোন ভাবেই ঈশ্বরের সাথে সহভাগিতায় থাকতে পারি না, কেননা আমরা নিজে থেকে কখনই যথেষ্ট ভাল হতে পারি না। এবং বিশ্বাসী হিসাবে যদি আমরা পরস্পর সহভাগিতা করতে চাই, আমাদের মধ্যেও অবশ্যই একটি ক্রুশ থাকা আবশ্যক, যার উপর আমাদের প্রত্যেকেই নিজ ব্যক্তিসত্ত্বাকে মারতে হবে। ক্রুশের উপর এই মৃত্যু ছাড়া সহভাগিতা অসম্ভব - উল্লম্ব এবং অনুভূমিক উভয় দিকে। ক্রুশ হলো জীবন এবং সহভাগিতার গোপন বিষয়। ক্রুশ ছাড়া কোন জীবন নেই এবং ক্রুশ ছাড়া কোন সহভাগিতাও সম্ভব নয়। অনন্তকালীন অতীত থেকেই ঈশ্বরের মনে ক্রুশ ছিল। মেষশাবকটি হত হয়েছিলেন "পৃথিবীর সূচনা হওয়ার আগে থেকেই" (প্রকাশিত বাক্য ১৩: ৮ - KJV)। ঈশ্বর প্রথম থেকেই শেষ অবধি জানেন এবং তাই ত্রি-এক (পিতা, পুত্র ও পবিত্রআত্মা) সমস্ত অনাদিকাল থেকে জানতেন যে দ্বিতীয় ব্যক্তিকে পৃথিবীতে একজন মানুষ হিসাবে আসতে হবে এবং মানুষের পাপের জন্য তাঁকে ক্রুশে দেওয়া হবে। ঈশ্বর আদমের পাপ করার পরে এই সিদ্ধান্তটি নেননি। এটি অনন্তকাল আগে থেকেই জানা ছিল। আদম পাপ করার পর ঈশ্বর জীবন বৃক্ষের সামনে এক তরবারি রাখেন। সেই তরবারি যীশুর উপরে পড়ল এবং তাঁকে মেরে ফেলল। এবং সেই তরবারি অবশ্যই আমাদের আদম-তুল্য নিজ জীবনের উপর পড়তে হবে - আমাদের অবশ্যই "খ্রীষ্টের সাথে ক্রুশারোপিত" হিসাবে আমাদের স্থানটি গ্রহণ করতে হবে (গালাতীয় ২:২০) - যদি আমাদেরকে জীবনবৃক্ষের কাছে এসে ঈশ্বরের সাথে এবং একে অপরের সাথে সহভাগিতা করতে হয়।

যোহন বলেছেন যে সহভাগিতা হলো আনন্দের পরিপূর্ণতা (১ যোহন ১: ৩, ৪)। আনন্দ খ্রীষ্টীয় জীবনের একটি প্রধান অংশ, কারণ আনন্দ হলো স্বর্গের পরিবেশ। স্বর্গে কোন বিষণ্ণতা নেই। স্বর্গদূতেরা কখনও নিরুৎসাহিত হোন না। তাঁরা সর্বদা জীবন এবং আনন্দে পরিপূর্ণ। এবং আমরাও সেই আনন্দ পেতে পারি যদি ঈশ্বরের সাথে আমাদের সহভাগিতা থাকে। পবিত্র আত্মা এসেছেন স্বর্গের পরিবেশ আমাদের হৃদয়ে আনতে - এবং এর একটি অংশ হলো আনন্দের পূর্ণতা। শয়তান আপনাকে বলবে যে আপনি যদি নিজের জীবনকে ঈশ্বরের কাছে সম্পূর্ণরূপে সমর্পণ করেন, তবে আপনি দুর্দশাগ্রস্থ, বিষণ্ণ-মুখী, বিষাদগ্রস্ত এবং হতাশাগ্রস্থ হবেন। দুর্ভাগ্যক্রমে এটি সত্য যে কিছু খ্রীষ্টান তাদের জীবনধারায় এই ছাপ প্রকাশ করে। আমি একজন বিষণ্ণ-মুখী খ্রীষ্ট বিশ্বাসীর গল্প শুনেছিলাম, তিনি কারও কাছে খ্রীষ্টের সাক্ষ্য দেন এবং তাকে জিজ্ঞাসা করেন, "আপনি কি খ্রীষ্টকে নিজের জীবনে গ্রহণ করতে চান?" ব্যক্তিটি সেই বিশ্বাসীর মুখের দিকে তাকিয়ে জবাব দিলেন, "না, আপনাকে ধন্যবাদ। আমার আগে থেকেই যথেষ্ট সমস্যা আছে!" এটি হলো আমাদের মহৎ ঈশ্বরের পক্ষে এক খারাপ সাক্ষী। যদি আপনার জীবন এবং আপনার গৃহ প্রভুর আনন্দকে বিকিরণ না করে, তবে আপনার জীবনে কিছু ভুল আছে। আপনি কোথাও না কোথাও ঈশ্বরের ইচ্ছা হারিয়ে ফেলেছেন।

যোহন আরও বলেছেন, যদি আপনি সহভাগিতা এবং আনন্দের এই জীবন পেতে চান, তবে আপনাকে প্রথমে বুঝতে হবে যে ঈশ্বর হলেন জ্যোতি এবং তাঁর মধ্যে কোনও অন্ধকার নেই (১ যোহন ১: ৫) - শূন্য মিথ্যা, শূন্য অশুদ্ধতা, শূন্য বিদ্বেষ, শূন্য অভিমান, ইত্যাদি। আপনি কি এমন জীবন চান যেখানে আপনি কখনও মিথ্যা বলবেন না, কাউকে ঘৃণা করবেন না, যেখানে আপনি কখনই কারও প্রতি হিংসা করবেন না এবং কখনও অহঙ্কার করবেন না? আপনি যদি সেই জীবনটি বেছে নেন, তবে আপনি কখনই হতাশাগ্রস্ত বা নিরুৎসাহিত হবেন না। আপনি প্রভুতে এক চিরস্থায়ী আনন্দে জীবনযাপন করবেন। এই পাপ-অভিশপ্ত পৃথিবীতে কি এমন জীবনযাপন করা সম্ভব? হ্যাঁ, এটি সম্ভব। ফিলিপীয় ৪: ৪ পদে আমাদের সর্বদা প্রভুতে আনন্দ করার আদেশ দেয়। এটি পৃথিবী-বাসী মানুষের জন্য লেখা হয়েছিল, স্বর্গ-নিবাসীদের জন্য নয়! আপনার আনন্দ পৃথিবীতে সম্পূর্ণ হতে পারে, আপনি পাটম দ্বীপে যোহনের মতো অত্যাচারিত হোন বা আপনি বাড়িতে আরাম করে বসে থাকুন না কেন। আপনার আনন্দ কখনই আপনার পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে না, যদি আপনি সর্বদা ঈশ্বরের আলোতে চলতে মনস্থ করেন।

যদি আমরা বলি যে তাঁর সাথে আমাদের সহভাগিতা রয়েছে এবং আমরা অন্ধকারে চলি, তবে আমরা সত্যের অনুশীলন করছি না। এমন অনেক খ্রীষ্টান আছে যারা বলে যে তাদের ঈশ্বরের সাথে সহভাগিতা আছে কিন্তু পাপের মধ্যে চলে। আপনি তাদের মুখে দেখতে পাবেন যে প্রভুর আনন্দ সেখানে নেই। জীবন যাত্রায় কোন সজীবতা নেই, তাদের মুখে কোন গান নেই, এবং চোখে কোন আনন্দোচ্ছলতা নেই। তারা ঈশ্বরের সাথে সহভাগিতার আনন্দকে হারিয়ে ফেলেছে। আমরা বিশ্বাসী জীবনে যত বেশি বয়ঃপ্রাপ্ত হয়ে উঠি, আমাদের আনন্দ তত বেশি হবে, যদি আমরা ঈশ্বরের সাথে চলি।