WFTW Body: 

ইব্রীয় ১০:৫ পদে আমরা পড়ি যে "ঈশ্বর আমাদের নৈবেদ্য চান না।" আমি এই পদটি সেই লোকদের উদ্দেশ্যে উদ্ধৃত করি যারা এমন প্রচারকদের যাতনার অধীনে থাকে যারা তাদের বলতে থাকেন যে ঈশ্বর তাদের নৈবেদ্য চান। ঈশ্বর আমাদের কাছ থেকে যা চান তার সম্পর্কে এখানে কী বলে? আমাদের দেহ। পুরাতন নিয়মে জোর দেওয়া হয়েছিল, "তোমাদের দশমাংশ লেবীয়দের দাও"। নতুন নিয়মে জোর দেওয়া হয়েছে, "আপন আপন দেহ ঈশ্বরকে দাও" (রোমীয় ১২:১)। একটি মণ্ডলী যা বারবার তার লোকদের দশমাংশ দিতে বলে, সেটি একটি পুরাতন নিয়মে মণ্ডলী। একটি নতুন নিয়মের মণ্ডলী আমাদের দেহগুলি জীবন্ত বলিরূপে ঈশ্বরের কাছে উত্সর্গ করার বিষয়ে জোর দেবে - আমাদের চোখ, আমাদের হাত, আমাদের জিভ ইত্যাদি। ঈশ্বর আজ আমাদের কাছ থেকে কোন বস্তুর উত্সর্গ চান না, বরং আমাদের দেহের উত্সর্গ চান। নতুন নিয়মের ঈশ্বরের কাছে আমাদের দেহগুলি উত্সর্গ করা হলো পুরাতন নিয়মের দশমাংশের সমতুল্য - যেমন ক্রুশের উপরে খ্রীষ্টের মারা যাওয়া ঠিক নিস্তারপর্বের দিনে উত্সর্গীকৃত পুরাতন নিয়মের মেষশাবকের সমান। এর অর্থ কি এই যে পৃথিবীতে ঈশ্বরের কাজের জন্য আমাদের এখন কোন অর্থ দিতে হবে না? আপনি অবশ্যই দিতে পারেন, তবে ঈশ্বর চান আপনি যেন হৃষ্টচিত্তে (প্রফুল্লভাবে) দান করেন (২ করিন্থীয় ৯:৭)। যাই হোক না কেন, তিনি প্রথমে আপনার দেহকে চান। যারা তাঁকে তাদের দেহ উত্সর্গ করেন, তারা সাধারণত তাঁকে অন্য সমস্ত কিছুই দেন। তবে সবকিছু অবশ্যই হৃষ্টচিত্তে এবং আনন্দের সাথে দেওয়া উচিৎ।

যীশু যখন এই পৃথিবীতে এসেছিলেন, তখন তিনি তাঁর পিতার কাছে দশমাংশ এবং উপাদান সকল উত্সর্গ করতে আসেননি (ইব্রীয় ১০:৫)। তিনি উত্সর্গ হিসাবে তাঁর দেহটি দিতে এসেছিলেন। এবং তিনি হলেন নতুন নিয়মের মধ্যস্থতাকারী এবং আমাদের শিখিয়েছেন যে ঈশ্বর আমাদের কাছ থেকে যা চান, প্রাথমিকভাবে, তা হল আমাদের দেহ।

যীশু যখন স্বর্গে ছিলেন তখন তাঁর কোনও মাংসিক দেহ ছিল না। তিনি যখন এই পৃথিবীতে এসেছিলেন তখন পিতা তাঁকে একটি দেহ দিয়েছিলেন। তিনি সেই দেহের সাথে কী করেছিলেন? তিনি কি তাঁর পিতার প্রতি তাঁর ভালবাসা প্রদর্শন করার জন্যে আফ্রিকার মতো কিছু কঠিন জায়গায় ধর্মপ্রচারক হিসাবে গিয়েছিলেন? নাকি তিনি প্রতিদিন ৪ ঘন্টা প্রার্থনা করতেন এবং সপ্তাহে দুবার উপবাস করতেন? সেইসব কিছুই না। তিনি বলেছেন, "আমি (পৃথিবীতে) আসিয়াছি, হে ঈশ্বর, যেন তোমার ইচ্ছা পালন করি - হোম/বলি উৎসর্গ করিতে নয়" (ইব্রীয় ১০:৭)। প্রভু যীশু তাঁর দেহটি এইভাবেই ব্যবহার করেছিলেন - এবং আমাদের দেহগুলিও এটির জন্য ব্যবহার করতে হবে। যখন আমরা ঈশ্বরের কাছে আমাদের দেহগুলি উপস্থাপন করি তখন তার প্রত্যেকটি অংশ - চোখ, হাত, জিহ্বা, আবেগ, আকাঙ্ক্ষা ইত্যাদি দিয়ে তাঁর ইচ্ছা পালন করা আবশ্যক। তারপরে জীবনে আমাদের একমাত্র আসক্তি হবে প্রতিদিন ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করা।

সবার আগে আমাদের জন্য ঈশ্বরের ইচ্ছা কী? " ঈশ্বরের ইচ্ছা এই, তোমাদের পবিত্রতা" (১ থিষলনীকীয় ৪:৩)। এটি আমাদের প্রত্যেকের জন্য ঈশ্বরের ইচ্ছার প্রথম অংশ। এবং যখন আমাদের সেবাকার্য্যের কথা আসে তখন ঈশ্বরের জন্য কিছু করার চেষ্টা করে আমরা এখানে ওখানে দৌড়ান উচিৎ নয়। আমাদের সেবাকার্য্যে আমাদের আবার ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করতে হবে। প্রভু যীশু আমাদের প্রার্থনা করতে শিখিয়েছেন, "তোমার ইচ্ছা সিদ্ধ হউক, যেমন স্বর্গে তেমনি পৃথিবীতেও হউক"। স্বর্গে স্বর্গদূতেরা কোনও উপায়ে বা অন্যভাবে ঈশ্বরের জন্য ব্যস্ত থাকার চেষ্টা করে দৌড়াদৌড়ি করেন না। প্রভু যীশুও তাঁর পিতার জন্য কোন কিছু করার চেষ্টা করে দৌড়াননি। তিনি পিতার ইচ্ছার অনুসন্ধান করেছিলেন এবং সেটাই করেছিলেন। পিতা যখন ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়স পর্যন্ত তাঁকে একজন ছুতোর হিসাবে কাজ করতে বলেছিলেন, তখন তিনি সেটাই করেছিলেন। এই সকল বছরগুলিতে তিনি তাঁর পার্থিব কাজের প্রতি বিশ্বস্ত থাকার পরে, পিতা তাঁকে বাইরে গিয়ে সাড়ে তিন বছর সুসমাচার প্রচার করার জন্য বলেছিলেন। যীশু যখন ১২ বছর ধরে চৌকি ও টেবিল তৈরির কাজ করেছিলেন এবং যখন সুসমাচার প্রচার ও অসুস্থদের আরোগ্যদান করেছিলেন এবং তখনও যীশু সমানভাবে পিতাকে সন্তুষ্ট করেছিলেন।

প্রভু যীশু ধর্মপ্রচারক হতে বা পূর্ণ-কালের কাজ করার জন্য পৃথিবীতে আসেননি। তিনি কেবল তাঁর পিতার ইচ্ছা পালন করতেই এসেছিলেন, তা যা কিছুই ছিল। তাঁর পিতার ইচ্ছা যখন ছুতোরের কাজ ছিল, তিনি তা করেছিলেন। যখন তাঁর পিতার ইচ্ছা পূর্ণকালীন কাজ করা ছিল, তখন তিনি তা করেছিলেন। পিতার ইচ্ছা পালন করার জন্য আমাদেরও নিজেকে উত্সর্গ করতে হবে, এবং এই কাজ বা সেই কাজ নয়। ঈশ্বর আপনাকে বরং একজন ছুতোর হিসাবেও আহ্বান করতে পারেন, ধর্মপ্রচারক হিসাবে নয়। আপনি রাজি আছেন?

প্রভু যীশু বলেছেন, "হে ঈশ্বর, দেখ, তোমার ইচ্ছা পালন করিবার জন্য আসিয়াছি।" এভাবে তিনি প্রথম নিয়মকে সরিয়ে দ্বিতীয় নিয়ম প্রতিষ্ঠা করলেন (ইব্রীয় ১০:৮, ৯)। প্রথম নিয়মে প্রচুর ধর্মীয় কার্যকলাপ ছিল - বিশেষতঃ পবিত্র আবাসনে এবং মন্দিরের ভিতরে। কিন্তু প্রভু যীশু তাঁর পার্থিব জীবনের ৯০% ভাগে কোনও ধর্মীয় কাজ করেননি। তিনি বাড়িতে তাঁর মাকে সাহায্য করেছিলেন এবং ৩০ বছর ধরে ছুতোরের কাজ করে পরিবারকে সাহায্য করেছিলেন। তারপরে তিনি পরবর্তী সাড়ে তিন বছর সুসমাচার প্রচার করেছিলেন। এইভাবে তাঁর পিতা তাঁকে যে কাজটি করতে দিয়েছিলেন তা তিনি শেষ করেছিলেন এবং পিতাকে মহিমান্বিত করেছিলেন (যোহন ১৭:৪ পদ দেখুন)। আমরা সেখানে শিখেছি যে অসুস্থদের আরোগ্যদান করার মতো বাড়িতে আপনার মাকে সহায়তা করা ঈশ্বরের চোখে সমান গুরুত্বপূর্ণ। নতুন নয়মে, ঈশ্বর একটা নির্দিষ্ট সময়ে আপনাকে যা করাতে চান সেটাই হলো ঈশ্বরের ইচ্ছা - এবং সেটাই সেই পবিত্রতম কাজ যা আপনি সেই নির্দিষ্ট সময়ে করতে পারেন।