WFTW Body: 

যীশু একবার পাঁচটি রুটি ব্যবহার করে প্রচুর লোককে খাইয়েছিলেন। তিনি প্রথমে রুটিগুলোকে আশীর্বাদ করেছিলেন। সেই পাঁচটি রুটি তখনও পাঁচটি রুটিই হিসাবে ছিল - এবং লোকদের খাওয়ানো হয়নি। যখন রুটিগুলিকে ভাঙলেন তখনই লোকদের খাওয়ানো সম্ভব হয়েছিল। সুতরাং, আত্মার দ্বারা আশীর্বাদ প্রাপ্ত (অভিষিক্ত) হওয়া যথেষ্ট নয়। প্রভুর দ্বারা আমাদেরকেও ভগ্ন হওয়া দরকার। তারপরে আমরা আমাদের মুখকে ধুলোয় রাখব এবং ঈশ্বরের শক্তি আমাদের মধ্য দিয়ে নির্বিঘ্নে প্রবাহিত হবে।

যাত্রাপুস্তক ৪ অধ্যায়ে, ঈশ্বর একই সময়ে মোশি এবং হারোণকে লোকদের নেতা হিসাবে নিযুক্ত করেছিলেন। হারোণ ছিলেন একজন সাবলীল বক্তা, তবে মোশি তা ছিলেন না (যাত্রাপুস্তক ৪: ১০, ১৪)। তবুও ঈশ্বর মোশিকে ব্যবহার করেছিলেন, হারোণকে নয় - কারণ মোশি ছিলেন একজন ভগ্নচূর্ণ ব্যক্তি, কিন্তু হারুন সেই প্রকারের ছিলেন না। ঈশ্বর মোশিকে প্রান্তরে ৪০ বছরের ভগ্ন সময়কালের মধ্যে দিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। ঈশ্বর তাকে রাজপ্রাসাদের শাসক হওয়া থেকে অবনত করে প্রান্তরের রাখাল বানিয়ে নম্র করেছিলেন। এবং ঈশ্বর মোশিকে ৪০ বছর তার শ্বশুরের সাথে থাকতে দিয়েছিলেন - এবং তার জন্য তিনি কাজও করতেন! তাকে পুরোপুরি ভাঙ্গতে এটা যথেষ্ট ছিল। হারোণ এমন ভগ্নচূর্ণ কখনই হোন নাই। এটাই ছিল তাদের দুজনের মধ্যে পার্থক্য।

আমরা যাত্রাপুস্তকের ৩২ আধ্যায়ে এই দুইজন মানুষের কার্যকারিতার মধ্যে পার্থক্য দেখতে পাই। যতক্ষণ সেই ভগ্নচূর্ণ ব্যাক্তি, মোশি, ইস্রায়েলের লোকেদের মধ্যে ছিলেন, ততক্ষণই তারা প্রভুর অনুসরণ করেছিলেন। কিন্তু যখন মোশি তাদের থেকে মাত্র ৪০ দিনের জন্য চলে গেলেন এবং হারোণ অস্থায়ীভাবে তাদের নেতা হলেন, তৎক্ষণাৎ তারা মূর্তিপূজা করতে চলে গেল এবং একটি সোনার বাছুরের উপাসনা করা শুরু করল। হারোণ ছিলেন একজন স্পষ্ট বক্তা। কিন্তু তিনি ঈশ্বরের লোকদের শুদ্ধভাবে রক্ষা করতে পারেননি, কারণ তিনি লোকদের খুশী করার চেষ্টা করেছিলেন। অভগ্ন প্রাচীনরা (পালকরা) সর্বদা তাদের নিজের সম্মানের সন্ধান করেন এবং তাদের মণ্ডলীর লোকদের খুশি করার চেষ্টা করেন। এই কারণেই তাদের লোকরা প্রভুর কাছ থেকে দূরে সরে যায়।

মোশি একজন ভগ্নচূর্ণ মানুষ ছিলেন, যিনি ৪০ বছর ধরে প্রান্তরে ঈশ্বরের পথে ২০ লক্ষ লোককে রক্ষা করেছিলেন। মণ্ডলীর ইতিহাসে বহু শতাব্দী জুড়ে এটিই হয়ে আসছে। ঈশ্বর তাঁর পদ্ধতিতে তাঁর মণ্ডলী সংরক্ষণের জন্য ভগ্নচূর্ণ মানুষদেরকে ব্যবহার করেছেন।

ঈশ্বর প্রাচীনদের (পালকদের) কাছে আমাদের বশীভূত হওয়ার মাধ্যমে আমাদেরকে ভগ্নচূর্ণ করে থাকেন। "একজন ধার্মিক লোকের বশীভূত হওয়া আমাদের কেবল অনেক মূর্খ কাজগুলি করা থেকে রক্ষা করবে না, বরং তাঁর কাছ থেকে আমাদেরকে প্রচুর জ্ঞান অর্জন করতে সক্ষম করবে"। তিনি নিজে যে বিপদগুলির মুখোমুখি হয়েছিলেন সেই সম্পর্কে আমাদের সতর্ক করতে সক্ষম হবেন যে সমস্ত বিষয় থেকে হয়তো আমরা অজ্ঞাত। যেমন শিশুরা তাদের পিতামাতার অধীনে নিরাপদ, তেমনি আধ্যাত্মিক কর্তৃত্বের অধীনে থাকা আমাদের পক্ষে ততোটাই নিরাপদ। ১-পিতর ৫:৫ পদে পড়ে থাকি যে অল্প বয়স্ক পুরুষদের (যুবকদের) তাদের প্রাচীনদের বশীভূত হওয়া উচিত, কারণ ঈশ্বর অহঙ্কারীদের প্রতিরোধ করেন তবে নম্রদের অনুগ্রহ প্রদান করেন। এখানে আমরা ঈশ্বরের কাছ থেকে আধ্যাত্মিক কর্তৃত্ব প্রাপ্তির মহৎ গোপনীয়তা দেখতে পাই। আমি অনেক ভালো ভাইদের জানি, যাদেরকে ঈশ্বর কখনও আধ্যাত্মিক কর্তৃত্ব দেননি, শুধুমাত্র একটি কারণের জন্য, তা হল তারা কখনও তাদের পুরো জীবনে কারও অধীনে থাকতে শিখেনি। এবং তাই তাদের দৃঢ় ইচ্ছা কখনও ভগ্নচূর্ণ হয়নি। অভগ্ন ব্যক্তির হাতে কর্তৃত্ব থাকা একটি অত্যন্ত বিপজ্জনক বিষয়। যদি আপনি প্রথমে ভগ্নচূর্ণ না হন এবং আপনি লোকদের উপর কর্তৃত্ব প্রয়োগের চেষ্টা করেন, তবে এই প্রক্রিয়াতে আপনি তাদেরকে নষ্ট করবেন এবং নিজেকেও ধ্বংস করবেন। আমাদের কারও উপর আধ্যাত্মিক কর্তৃত্বের দায়িত্ব দেওয়ার আগে ঈশ্বরকে প্রথমে আমাদের অহঙ্কারের শক্তিটি ভাঙতে হয়।

আমার নিজের অভিজ্ঞতা আপনাকে সংক্ষেপে বলি। আমার জীবনের ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সের মধ্যে দশ বছর ধরে, ঈশ্বর আমাকে নত হওয়ার অনুমতি দিয়েছিলেন এবং আমার সেবাকার্যের প্রতি ঈর্ষান্বিত প্রাচীনদের দ্বারা একাধিক মণ্ডলীর সামনে ও প্রকাশ্যে অপমানিত হতে দিয়েছিলেন। এই সমস্ত পরিস্থিতিতে প্রভু আমাকে বলেছিলেন, আমার মুখ বন্ধ রাখতে এবং কোন কিছু প্রশ্ন না করে ওই প্রাচীনদের বশীভূত থাকতে। এবং আমি তাই করেছিলাম। আমি যখন তাদের গীর্জার (মণ্ডলীর) সাথে জড়িত ছিলাম এবং তাদের গীর্জা ত্যাগ করার পরেও আমি তাদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছিলাম। ঐ বছরগুলিতে, আমি কখনই জানতাম না যে ভবিষ্যতে ঈশ্বর আমার জন্য কী সেবাকার্য সঞ্চয় করে রেখেছেন। কিন্তু ঈশ্বর আমাকে বহু বছর ধরে ভগ্নচূর্ণ করে আধ্যাত্মিক কর্তৃত্ব প্রয়োগ করার জন্য প্রস্তুত করছিলেন। তিনি এখনও আমাকে ভগ্নচূর্ণ করা শেষ করেননি। গত কয়েক বছর ধরে, ঈশ্বর আমাকে এমন নতুন পরীক্ষার মধ্য দিয়ে নিয়ে গিয়েছেন যা আমি এর আগে কখনও অনুভব করি নি - যেমন ধর্মীয় লোকেদের দ্বারা আদালতে যাওয়া এবং সেখানে ১০ বছর ধরে মিথ্যা অভিযোগে অভিযুক্ত হওয়া। তবে আমার জীবনে তাঁর (ঈশ্বরের) উদ্দেশ্য একই রয়ে গেছে - আমাকে আরও ভগ্নচূর্ণ করা, যাতে তিনি তাঁর জীবন ও তাঁর কর্তৃত্বকে আমার কাছে আরও বেশি করে প্রতিপন্ন করতে পারেন।

ঈশ্বর আমাদের নেতাদের মাধ্যমে আমাদের শক্তি এবং আমাদের অহংকারকে ভগ্ন করে সংশোধন করেন। প্রায় সমস্ত বিশ্বাসীরাই সংশোধন গ্রহণ করাকে খুব কঠিন বলে মনে করেন। এমনকি দু'বছরের শিশুর পক্ষেও সংশোধন গ্রহণ করা সহজ নয় - বিশেষত যদি এটি প্রকাশ্যে দেওয়া হয়। আপনি শেষবার কবে আনন্দের সাথে জনসাধারণের সামনে সংশোধন গ্রহণ করেছিলেন? আপনি কি আপনার জীবনে একবারে মত এটি গ্রহণ করেছেন? যদি তা না হয়, তবে অবাক হওয়ার মতো কিছুই নেই যে আপনার কাছে আধ্যাত্মিক কর্তৃত্বের অভাব রয়েছে। "অভগ্নমানুষ ক্রমশ একাকী হয়ে যান"। তারা কখনও কারও কাছে বশীভূত হয় না। তারা যেখানে যেতে চায় সেখানে যায় এবং যা করতে চায় তাই করে। এই অভগ্ন বিশ্বাসীরা কেবলমাত্র তাদের সাথেই কাজ করে যারা আজ্ঞা পালন করে এবং তারা যা কিছু বলে তাই গ্রহণ করে। ঈশ্বর কখনও এই জাতীয় "একাকী লোকেদের" উপর আধ্যাত্মিক কর্তৃত্ব দান করতে পারেন না, কারণ তিনি কোন " ব্যক্তিতাবাদী বিশ্বাসীদের দল" নয় বরং তিনি একটি দেহ তৈরি করছেন।