WFTW Body: 

আধ্যাত্মিক অহংকার একটি বড় বিপদ যার সম্মুখীন আমরা সকলে সর্বদাই হই - এবং বিশেষ করে যখন প্রভু আমাদের পরিশ্রমে আশীর্বাদ করেন। তখন কল্পনা করা খুব সহজ যে আমরা "কোন এক বিশেষ ব্যক্তি" হয়ে গেছি, যেখানে আমরা সর্বদা "কিছুই" না। তারপর ঈশ্বর নিজেই আমাদের বিরোধিতা করবেন এবং আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবেন - কারণ ঈশ্বর সমস্ত অহংকারী লোকের বিরোধিতা করেন, তারা যেই হোক না কেন। যখন আমরা প্রতিভাবান হই, বা যখন আমাদের ব্যক্তিগত জীবন এবং পারিবারিক জীবনে বিষয়গুলি ঠিকঠাক চলে, বা যখন আমাদের মণ্ডলী ক্রমশ বৃদ্ধি পায়, বা যখন আমরা জাগতিক সম্পদের ক্ষেত্রে ধনী হই, তখন গর্বে পরিপূর্ণ হওয়া খুব সহজ হয়ে যায়। অন্য যেকোনো পাপের চেয়ে আমাদেরকে আধ্যাত্মিক গর্ব এবং স্বার্থপরতার উপর বেশি আলো (দৃষ্টি) পেতে হবে। এই সকল ক্ষেত্রে নিজেদেরকে প্রতারণা করা আমাদের জন্য খুবই সহজ। আমরা কল্পনা করতে পারি যে আমরা খুব নম্র এবং নিঃস্বার্থ যখন আমরা আসলে খুব অহংকারী এবং আত্মকেন্দ্রিক। শয়তান এক মহা প্রতারক।

এখানে আধ্যাত্মিক অহংকারের কিছু প্রমাণ রয়েছে যা আমাদের নিজ প্রকৃত অবস্থা দেখতে সাহায্য করে: অসন্তুষ্ট হওয়া, রাগান্বিত হওয়া, যৌন সম্বন্ধে অশুদ্ধ চিন্তাভাবনা, ভুল স্বীকার করতে অনিচ্ছা, ক্ষমা চাইতে বিলম্ব করা, মণ্ডলীতে আমাদের সহ-বিশ্বাসীদের সাথে সহভাগিতা পুনরুদ্ধারে বিলম্ব করা, ইত্যাদি।

একজন অহংকারী নেতা তার মণ্ডলীতে একজন স্বৈরশাসকের মতো আচরণ করবেন এবং সেভাবে মণ্ডলী চালাবেন যেভাবে একজন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) তার কোম্পানি চালান। এমন একজন ব্যক্তি কখনই মণ্ডলীকে (খ্রীষ্টের) দেহ হিসেবে গড়ে তুলতে পারবে না।

আধ্যাত্মিক অহংকার শরীরের গন্ধ এবং মুখের গন্ধের মতো। আমরা নিজেরা (অনেকেই) এর গন্ধ পাই না, কিন্তু অন্যরা এর গন্ধ পেতে পারে। উদাহরণ স্বরূপ, একজন প্রাচীন যখন তার সেবাকার্য সম্বন্ধে গর্ব করেন, তখন তিনি বুঝতে পারেন না যে তার কাছ থেকে দুর্গন্ধময় আধ্যাত্মিক অহংকার নির্গত হচ্ছে। কিন্তু একজন ধার্মিক ব্যক্তি অবিলম্বে তার মধ্যে আধ্যাত্মিক অহংকার অনুভব করবেন।

একজন নেতার মধ্যে একটি অহংকারী মনোভাব তার মণ্ডলীকে একটি বাবিলের মণ্ডলী করে তুলবে, যেমনটি আমরা নবূখদ্‌নিৎসরের মনোভাব দেখেছি (দানিয়েল ৪:৩০), ঈশ্বর অবিলম্বে তাকে প্রত্যাখ্যান করার মাধ্যমে তাকে নম্র করেছিলেন।

আধ্যাত্মিক অহংকার তৈরি করে সম্মানের অভাব বড় ভাইদের প্রতি এবং তাদের প্রতি যাদের পক্ষে স্বয়ং ঈশ্বর সাক্ষ্য দিয়েছেন। এই ধরনের একজন নেতা তার মণ্ডলীর অন্যেরা তার কাছে বশ্যতা স্বীকার করবেন বলে আশা করেন, কিন্তু সে নিজেকে কোন আধ্যাত্মিক কর্তৃত্বের কাছে বশ্যতা স্বীকার করতে রাজি হবে না যাকে ঈশ্বর তার উপর নিযুক্ত করেছেন। অন্তিম দিনে খ্রীষ্টানদের মধ্যে এই সম্মানের অভাব ক্রমশই প্রবল হবে। আমরা আজকাল আমাদের চারপাশে অনেক শিশু এবং যুবক-যুবতীর মধ্যে এটি দেখতে পাই - যেভাবে তারা বয়স্ক, ধার্মিক ভাইদের সাথে কথা বলে।

দিয়ত্রিফির উদাহরণ (৩ যোহন ১:৯) এবং মণ্ডলীর পাঁচজন পিছিয়ে পড়া প্রাচীনদের বিষয়ে যোহন যা লিখেছিলেন (প্রকাশিত বাক্য ২ এবং ৩ অধ্যায়), তা আমাদের সকলের জন্য একটি সতর্কবাণী৷ যেমনটি আমরা আগে বিবেচনা করেছি, যদি সেই নেতারা (প্রাচীনরা) নিজেদের বিচার করতেন, তাহলে ঈশ্বর নিজেই সরাসরি তাদের ব্যর্থতা দেখাতেন। তখন তাঁকে প্রেরিত যোহনের মাধ্যমে তাদের ব্যর্থতাগুলো তুলে ধরতে হতো না।

যখন আমরা নিজেদের বিষয়ে বিচার করা বন্ধ করব, তখন আমরা এমন প্রচার শুরু করব, যেন আমরা বিশেষজ্ঞ। আর তখন প্রভু আমাদের পাশে দাঁড়াবেন না। সুতরাং, আমাদের অবশ্যই প্রতিদিন নিজেদের বিচার করি এবং এবং সর্বদা নিজেদের জীবন ও সেবাকার্যকে ক্ষুদ্র হিসাবে মূল্যায়ন করি। ঈশ্বর আমাদের জীবন এবং আমাদের পরিশ্রমের সাক্ষ্য দিচ্ছেন কিনা তা দেখতে আমাদের অবশ্যই নিজেদেরকে ক্রমাগত পরীক্ষা করতে হবে (গালাতীয় ৬:৪)। যদি না করি, তাহলে কোথাও কিছু গুরুতর ভুল আছে।

এখানে আমি সমস্ত নেতাদের এই তিনটি স্থরে উপদেশ দিতে চাই:

১. সর্বদা আপনার মুখ ধুলায় রেখে ঈশ্বরের উপাসনা করুন।

২. সর্বদা মনে রাখবেন আপনি একজন সাধারণ ভাই।

3. সর্বদা আপনার জন্য প্রভুর প্রেমের উপর ধ্যান করুন, এটি কল্পনা করার পরিবর্তে যে আপনি তাকে অনেক প্রেম করেন ।

"আত্মাতে দীনহীন" হওয়ার অর্থ হচ্ছে "নিজেকে তুচ্ছ মনে করা" (মথি ৫:৩3 - পরিবর্ধিত বাইবেল) এবং ব্যক্তিগত, আধ্যাত্মিক প্রয়োজনের অবিচ্ছিন্ন অনুভূতি নিয়ে বেঁচে থাকা।