WFTW Body: 

ঈশ্বরের বাক্য তিনটি সময়কালে "পরিত্রাণের" কথা বলে - অতীত (ইফিষীয় ২:৮), বর্তমান (ফিলিপীয় ২:১২) এবং ভবিষ্যৎ (রোমীয় ১৩:১১) - বা অন্য কথায়, ন্যায়পরায়নতা, পবিত্রকরণ এবং মহিমান্বিত।

১. ন্যায়পরায়নতা

পরিত্রাণের একটি ভিত্তি এবং একটি সম্পূর্ণ কাঠামো রয়েছে। ভিত্তিটি হলো পাপের ক্ষমা এবং ন্যায়পরায়নতা। ন্যায়পরায়নতা হলো আমাদের পাপ ক্ষমার চেয়ে আরও বেশি কিছু। এর আরও অর্থ হলো খ্রীষ্টের মৃত্যু, পুনরুত্থান এবং আরোহণের ভিত্তিতেই আমরা ঈশ্বরের চোখে ধার্মিক বলে ঘোষিত হয়েছি। এটি আমাদের কাজের ভিত্তিতে নয় (ইফিষীয় ২:৮,৯), কারণ আমাদের ধার্মিক কাজগুলিও ঈশ্বরের দৃষ্টিতে নোংরা ছেঁড়া নেকড়ার (মলিন বস্ত্র) মতো (যিশাইয় ৬৪:৬)। আমরা খ্রীষ্টের ধার্মিকতার পোশাক পরিধান করেছি (গালাতীয় ৩:২৭)। অনুতাপ এবং বিশ্বাস হলো ক্ষমাপ্রাপ্ত ও ন্যায়পরায়ন হওয়ার শর্ত (প্রেরিত ২০:২১)। সত্যিকারের অনুশোচনা অবশ্যই আমাদের মধ্যে পুনরুদ্ধারের ফল উত্পন্ন করে - অর্থ এবং জিনিস ফিরিয়ে দেওয়া এবং কর দেওয়া, যা ভুলক্রমে আমাদের দখলে রয়েছে (যা প্রকৃতপক্ষে অন্যের) এবং যাদের কাছে ভুল করেছি আমাদেরকে তাদের কাছে যতদূর সম্ভব ক্ষমা চেয়ে নেওয়া (লুক ১৯:৮,৯)। ঈশ্বর যখন আমাদের ক্ষমা করেন, তখন তিনিও চান যে আমরা অন্যদেরকে একইভাবে ক্ষমা করি। আমরা যদি এটি করতে ব্যর্থ হই তবে ঈশ্বর তাঁর ক্ষমা প্রত্যাহার করবেন (মথি ১৮:২৩-৩৫)। অনুশোচনা এবং বিশ্বাস অবশ্যই জলে নিমজ্জিত হয়ে বাপ্তিস্ম গ্রহণের দ্বারা অনুসরণ করা আবশ্যক, যার মাধ্যমে আমরা প্রকাশ্যে ঈশ্বরের কাছে, মানুষের কাছে এবং ভূতদের কাছে সাক্ষ্য দিই যে আমাদের পুরাতন মনুষ্যটি প্রকৃতপক্ষে সমাধিস্থ হয়েছে (রোমীয় ৬:৪, ৬)। এরপরে আমরা পবিত্র আত্মায় বাপ্তিস্ম গ্রহণ করতে পারি, যার মাধ্যমে আমরা আমাদের জীবন এবং আমাদের বাক্যের দ্বারা খ্রীষ্টের সাক্ষী হওয়ার শক্তি পরিধান করি (প্রেরিত ১:৮)। পবিত্র আত্মায় বাপ্তিস্ম হলো ঈশ্বরের সমস্ত সন্তানের জন্য বিশ্বাসের দ্বারা প্রাপ্ত হওয়ার প্রতিশ্রুতি (মথি ৩:১১, লুক ১১:১৩)। আত্মার এই সাক্ষী লাভ করা প্রতিটি শিষ্যেরই বিশেষ অধিকার যে তিনি সত্যই ঈশ্বরের সন্তান (রোমীয় ৮:১৬) এবং নিশ্চিতভাবে এটিও জানতে পারা যে তিনি সত্যই পবিত্র আত্মা পেয়েছেন (প্রেরিত ১৯:২)।

২. পবিত্র করণ

পবিত্রতা হলো একটি ভবনের উপরিকাঠামো। পবিত্রতা (এর অর্থ হলো পাপ এবং জগৎ থেকে 'বিচ্ছিন্ন হওয়া') এমন একটি প্রক্রিয়া যা নতুন জন্মের সাথে শুরু হয় (১ করিন্থীয় ১:২) এবং এটি ক্রমাগত আমাদের পার্থিব জীবন জুড়ে থাকা উচিত (১ থিষলনীকীয় ৫:২৩, ২৪)। এটি এমন একটি কাজ যা ঈশ্বর পবিত্র আত্মার মাধ্যমে আমাদের মধ্যে সূচনা করেছিলেন, তাঁর আইন আমাদের হৃদয় ও মনের উপরে লিখেছেন; তবে আমাদেরকে আমাদের অংশটি করতে হবে, সভয়ে ও সকম্পের সাথে আমাদের পরিত্রাণের কাজটি করতে হবে (ফিলিপীয় ২:১২, ১৩)। আত্মা আমাদেরকে যে শক্তি দেন তার মাধ্যমে আমরা মাংসিক দেহের কাজকর্মগুলিকে মৃত্যুসাৎ করি (রোমীয় ৮:১৩)। আমাদেরকে অবশ্যই মাংস এবং আত্মার সমস্ত কলুষতা থেকে নিজেকে পরিষ্কার করতে হবে, ঈশ্বরের ভয়ে পবিত্রতায় নিখুঁত হতে হবে (২ করিন্থীয় ৭:১)। একজন শিষ্য যেখানে এই কাজে পবিত্র আত্মার সাথে সহযোগিতা করার ক্ষেত্রে সম্পূর্ণরূপে আগ্রহী এবং আন্তরিক, সেখানে পবিত্রতার কাজটি তার জীবনে দ্রুত অগ্রগতি লাভ করবে। আত্মার নেতৃত্বের প্রতি যে ব্যক্তির প্রতিক্রিয়া নিষ্ক্রিয়/ অলস তার জীবনে স্পষ্টতই কাজটি ধীর হবে বা থেমে থাকবে। প্রলোভনের সময়েই পবিত্রতা কামনা করার ক্ষেত্রে আমাদের আন্তরিকতাকে সত্যিকারে পরীক্ষা করা যায়। পবিত্র হওয়ার অর্থ হলো ব্যবস্থার ধার্মিকতা আমাদের হৃদয়ের অভ্যন্তরে পরিপূর্ণ হওয়া - এবং পুরাতন নিয়মের মতো কেবল বাহ্যিকভাবে নয় (রোমীয় ৮:৪)। প্রভু যীশু এই বিষয়টিকে মথি ৫:১৭-৪৮ পদে গুরুত্ব দিয়েছিলেন। ঈশ্বরকে আন্তরিকভাবে প্রেম এবং আমাদের প্রতিবেশীকে নিজের মতো করে প্রেম করার মাধ্যমে প্রভু যীশু ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তাগুলি সংক্ষিপ্ত করেছিলেন (মথি ২২:৩৬-৪০)। প্রেমের এই নিয়মটিই ঈশ্বর এখন আমাদের হৃদয়ে লিখতে চেয়েছেন, কারণ এটি তাঁর নিজস্ব স্বভাব (ইব্রীয় ৮:১০, পিতর ১:৪)। এর বাহ্যিক প্রকাশটি হবে সমস্ত সজ্ঞান পাপের উপর বিজয়ী জীবন এবং প্রভু যীশুর সমস্ত আদেশের প্রতি আনুগত্য (যোহন ১৪:১৫)। প্রভু যীশু শিষ্যত্বের যে শর্ত রেখেছিলেন সেগুলি পূরণ না করেই এই জীবনে প্রবেশ করা অসম্ভব (লুক ১৪:২৬-৩৩)। এগুলি হলো আমাদের সমস্ত আত্মীয় এবং আমাদের স্ব-জীবনের উপরে প্রভুকে প্রথম স্থান দেওয়া এবং সমস্ত জাগতিক ধন-সম্পদ এবং সম্পত্তির অধিকার থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া। এটি হল সেই সঙ্কীর্ণ দ্বার যার মধ্য দিয়ে প্রথমে আমাদের যেতে হবে। এরপরে আসে পবিত্রতার সঙ্কীর্ণ পথ। যারা পবিত্রতার অনুসরণ করেন না, তারা কখনই প্রভুকে দেখতে পাবেন না (ইব্রীয় ১২:১৪)।

৩. মহিমান্বিত

যদিও এখানে এবং এখন আমাদের বিবেকের মধ্যে নিখুঁত হওয়া সম্ভব (ইব্রীয় ৭:১৯; ৯:৯, ১৪), প্রভু যীশুর প্রত্যাবর্তনে আমাদের গৌরবময় দেহ না পাওয়া পর্যন্ত পাপহীনভাবে নিখুঁত হওয়া সম্ভব নয় (১ যোহন ৩:২)। আমরা তখনই কেবল তাঁর মতো হতে পারি। তবে তিনি যেভাবে চলেছিলেন আমাদেরকে অবশ্যই এখন তাঁর মতো চলতে চেষ্টা করতে হবে (১ যোহন ২:৬)। যতক্ষণ আমাদের এই দূষিত দেহ থাকবে ততক্ষণ এর মধ্যে অচেতন পাপ পাওয়া যাবে, তা আমরা যতই পবিত্র হতে থাকি (১ যোহন ১:৮)। তবে আমরা আমাদের বিবেকের কাছে নিখুঁত হতে পারি (প্রেরিত ২৪:১৬) এবং সজ্ঞান পাপ থেকে মুক্ত হতে পারি (১ যোহন ২: ১ক), এমনকি এখনই যদি আমরা আন্তরিক হই (১ করিন্থীয় ৪:৪)। এইরূপে আমরা খ্রীষ্টের দ্বিতীয় আগমন এবং আমাদের গৌরব অর্জনের জন্য অপেক্ষা করি - আমাদের পরিত্রাণের চূড়ান্ত অংশ, যখন আমরা পাপহীনভাবে নিখুঁত হয়ে উঠব (রোমীয় ৮:২৩, ফিলিপীয় ৩:২১)।